ছোটগল্পের একটা আলাদা মজা রয়েছে। যা আপাতদৃষ্টিতে শেষ হলেও, শেষ হয় না, বরং গল্প বলার সঙ্গে সঙ্গে, শেষে রেশ রেখে যাওয়াটাই গুরুত্ব পায়। আর রেশই হয়ে ওঠে ছবির ইউএসপি। নেটদুনিয়ায় মুক্তিপ্রাপ্ত পরিচালক অরুণাভ খাসনবিসের নতুন ছবি ‘আমিষ’-এর ক্ষেত্রে ঠিক একথা খেটে যায়।

কেননা, এই ছবির গল্প, গল্প বলার ধরন, শেষ হয়েও, মস্তিষ্কে ঘুরপাক খেতে থাকে। ঠিক যেমন, ছবির মূল চরিত্রে প্রীতি এবং তাঁর মস্তিষ্কে ঘুরে বেড়ানো সেই ছায়া, যা কিনা এক সময়ে আটকে!
হ্যাঁ, পরিচালক অরুণাভ তাঁর এই ছবির গল্পে টাইম এবং স্পেশের খেলা দেখিয়েছেন। একটা পুরনো বাড়ির দেওয়াল, অন্দরে বার বার মিলে মিশে গিয়েছে অতীত, বর্তমান! কখনও আবার ভবিষ্যতও। আর এই প্যাটার্নে ফেলেই, এক ক্লাস স্ট্রাগল এবং অতীতের অন্ধকারে লুকনো এক পাপকে সামনে নিয়ে এসেছেন পরিচালক। প্রীতির চরিত্রটা যেন সেই সময়ের কাঁটা, যা কিনা ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেই অতীত সময়ে।
গল্পের দিক থেকে ‘আমিষ’ একেবারেই সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। যা কিনা অনেক সময়ই ভয়ের ছবির ফমূর্লাকেও টেনে নিয়ে আসে। তবে এই ছবি দেখলে ভয় হয় না বরং মস্তিষ্কে ধাক্কা দেয়, উঁচু-নীচু ক্লাসের সমীকরণ। আর একটা ক্রাইম!
গল্পটা একটু ছুঁয়ে নেওয়া যাক। কলকাতা থেকে কাজের কারণে চন্দনপুরে এসে পড়ে প্রীতি। সে পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। মায়ের কথাতেই সে পা দেয় দাদু-দিদার পুরনো বাড়িতে। বাড়িতে পা দেওয়া মাত্রই তাঁর সঙ্গে ঘটে চলে অদ্ভুত অদ্ভুত কাণ্ড। প্রীতি যেন এক সময়চক্রে আটকে পড়ে। আর এখান থেকেই প্রতিটি ফ্রেমে ছবি নতুন নতুন মোচড় নেয়।
অভিনয়ের দিক থেকে প্রত্য়েকেই অসাধরণ। নজর কেড়েছেন সোশাল মিডিয়ার জনপ্রিয় মুখ প্রীতি। ছবিটি দেখতে দেখতে বোঝা গিয়েছে, তাঁর অভিনয় করতে একেবারেই ‘প্রবলেম’ হয়নি। তবে নজর আটকে থাকে ‘কাজের মেয়ে’ চরিত্রে মনিকা পালের অভিনয়।
তবে কয়েকটি জিনিস না বললেই নয়। যা কিনা এই ছবির বড় খুঁত। তা হল, ভগ্নপ্রায় পুরনো বাড়িতে প্রীতির বেডরুমে একেবারে ঝকঝকে। যা কিনা বেশ চোখে লাগে। এমনকী, প্রীতির ব্যাকস্টোরিও খুব দুর্বল। তবে গল্পের বাঁধন বেশ টান টান। আসলে আমিষ ছবির গল্পই হল ইউএসপি। যার কারণেই এই ছবি নিয়ে নানা কথার ভিড় নেটদুনিয়ায়।