বার্তাবাংলা ডেস্ক::দ্রুত বাড়ছে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের বাজার। ২০১২ সালে অ্যান্ড্রয়েড মার্কেটের আকার ছিল ১৩ বিলিয়ন ডলার যা ২০১৩ সালে এসে ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পরিণত হয়েছে। এই বিশাল বাজারে দেশের তরুণদের ভাগ বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, অ্যান্ড্রয়েডের বিলিয়ন ডলার মার্কেটে আপনাদের নেতা হতে হবে। আপনারই এই মার্কেটে নেতৃত্ব দিতে হবে। এজন্য নিজে শিখুন, আশপাশের অন্যদেরও শেখান। বরিশাল বিভাগে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল বুট ক্যাম্প বা জাতীয় প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন নজরুল ইসলাম খান। বরিশাল মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই বুট ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, কম্পিউটার জানা ছেলেমেয়েদের আমরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তৈরি করছি। এই ফ্রিল্যান্সারদের উদ্যোক্তা তৈরি করা হচ্ছে। আর এই উদ্যোক্তাদেরই শিল্পপতি হিসেবে প্রস্তুত করা হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপসচিব ও কর্মসূচি পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবুল হাসানের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বক্তব্য দেন বরিশাল মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. রঞ্জিত চন্দ্র খান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুনুর রশিদ খান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মাদ ইব্রাহীম, বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল্লাহ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন, এমসিসি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী আশ্রাফ আবির। এই বুট ক্যাম্পটি পরিচালনা করে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান এমসিসি লি.। প্রকল্পের নানা দিক তুলে ধরে আবুল হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত করতে এই প্রকল্প সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্পের আওতায় ২৫০০ ছাত্রছাত্রীকে অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপার প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। আরও একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যেটার মাধ্যমে ২৫০০০ মানুষকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। দিনব্যাপী এই বুট ক্যাম্পে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঁচশ’র বেশি অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার একত্রিত হন। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের বিভিন্ন উচ্চতর কারিগরি বিষয় যেমন গেইম ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপের ব্যবসার উপায় ছাড়াও একটি অ্যাপ্লিকেশনের ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে সাধারণত যেসব অসুবিধা হয় এমন একাধিক বিষয় নিয়ে সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দেশের কয়েকজন সেরা মোবাইল অ্যাপ নির্মাতারাও এই বুট ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা তাদের সঙ্গে পেশাগত বিষয় নিয়ে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পান। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের গ্রামীণফোন, সিম্ফোনি ও নকিয়ার পক্ষ থেকে পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, বরগুনার এডিএম মোঃ হাবিবুর রহমান, পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ খায়রুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, জাতীয় পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় এর আগে ঢাকা, সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে পাঁচটি বুট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া একই প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জেলা পর্যায়ে ৬২টি প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২৩৪৭ জন শিক্ষার্থীকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য যুক্ত করুন