বার্তাবাংলা ডেস্ক »

computerবার্তাবাংলা ডেস্ক :: বিজ্ঞানী কেনেথ বোল্ডিং ১৯৫৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ‘পৃথিবীর সীমাবদ্ধতা’ শীর্ষক এক বিজ্ঞান সেমিনারের সমাপনী অধিবেশনের সমাপ্তি টেনেছিলেন এভাবে— ‘মানুষের সম্ভাব্য শক্তি অতি ভীষণ। এখন আর প্রস্তর যুগে ফিরে যাওয়া যাবে না। দুধে মাখন রয়েছে এবং আমাদেরকেই তা মন্থন করে নিতে হবে। জ্ঞানই শক্তি আর আকাশই তার সীমা।’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গত ৫০ বছরে এ পৃথিবী এতটাই এগিয়ে গেছে, মানুষের উদ্ভাবনাগুলোকে স্রেফ অবিশ্বাস্যই মনে হয়। মঙ্গলবার রয়টার্স এক সংবাদে জানিয়েছে, কম্পিউটার চালাতে মাউস আর কী বোর্ডের দিন শেষ হয়ে এলো! কারণ আগামী দিনগুলোতে কম্পিউটার চলবে স্রেফ হাতের ইশারায়।

এতে বলা হয়, জাদুকর যেভাবে জাদুর কাঠি নেড়েচেড়ে স্টেজে পারফরমেন্স দেখান, একই স্টাইলে হাত নেড়েচেড়েই কম্পিউটার চালানোর প্রযুক্তি এখন বিজ্ঞানীদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ইশারা পেলেই কম্পিউটারে জুম নিজ থেকেই সচল হবে। কম্পিউটারের অধিকাংশ অ্যাকশনের নিয়ন্ত্রণ চলবে হাতের কারুকাজে।

নতুন এ অ্যাপসটির নাম এয়ারস্পেস। সান ফ্রান্সিসকো ভিত্তিক লিপ মোশন কোম্পানি এই অ্যাপস বানিয়েছে। তারা দাবি করেছে, বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানির কমপক্ষে ৭৫টি অ্যাপস হাতের ইশারায় চলছে।

প্রতিষ্ঠানটির পণ্য বিপণন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল জাগোরসেকের ভাষায় ‘ব্যবহারকারী ও কম্পিউটারের মাঝে কিছুটা জায়গা খালি থাকে। আমরা এই খালি জায়গাটুকু প্রযুক্তির ছোঁয়ায় জীবন্ত বানিয়ে দিতে চাই। কিবোর্ড, মাউসকে আপনি জাদুঘরে পাঠাতেই পারেন।’

তিনি জানান, মাত্র ৮০ ডলারের লিপ মোশন কন্ট্রোলার নামের ছোট্ট একটি ডিভাইসই নিয়ন্ত্রণ করবে এয়ারস্পেস নামের অ্যাপসটি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনটিতে নাম এসেছে ‘পেইন্টার ফ্রিস্টাইল’ নামের একটি অ্যাপসের। কানাডার সফটওয়্যার কোম্পানি ‘কোরেল’ এটা বানিয়েছে। এটা চিত্রশিল্পীদের শিল্পকৌশল অনুকরণ করতে পারে। আর এটি ব্যবহার করলে আঙুলের ইশারায় কম্পিউটারের স্ক্রিনে ভেসে উঠবে পেইন্টব্রাশের হালকা স্ট্রোক। আঙুল শক্ত করলে স্ট্রোকটি বেশ গাঢ় হবে।

নিরাপত্তার জন্য অনেকেই কম্পিউটারে পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখেন। ‘আনলক’ নামে ছোট্ট একটি ডিভাইস দিয়ে আঙুলের ইশারায় তা খোলার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এই ডিভাইস প্রত্যেকের আঙুলের বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করতে পারে ঝামেলা ছাড়াই।

চোখের ইশারায় গেম নিয়ন্ত্রণের অ্যাপসও তৈরি হয়ে গেছে। কানাডাভিত্তিক একটি কোম্পানি এটা বানিয়েছে। এই ডিভাইস দিয়ে কম্পিউটারে ত্রিমাত্রিক মডেলিং ও রিমোট কন্ট্রোলও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মাইক্রোসফটের কিনেক্ট ডিভাইসও হাতের ইশারায় চলে।

তবে মাইকেল জাগোরসেক এটা মনে করেন না যে, হাতের বা চোখের ইশারায় চলার উপযোগী অনেক অ্যাপস চালু হলেও কম্পিউটারের কি বোর্ড ও মাউস আরও অনেক দিন রয়ে যাবে। তারপরও প্রযুক্তির ত্রিমাত্রিক কাজগুলোই আগামী দিনে বড় মাপের ভূমিকা পালন করবে।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »