বাজারে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমী ফল। এরইমধ্যে রাজধানীর আড়তগুলোতে আসতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার আম হিমসাগর ও গোবিন্দভোগ। আসছে মানিকগঞ্জের গাছ পাকা গুটি আমও।
তবে, এসব আম আসছে বেশ অল্প পরিমাণে। সে কারণে ভারতীয় চোরাইপথে আসা আম বাজার দখল করতে শুরু করেছে।
আড়তদারদের দেওয়া তথ্য মতে, এখনো প্রতিদিন ভারতীয় রাসায়নিক যুক্ত আম আসছে ট্রাকে ট্রাকে। এর বেশির ভাগই আসছে সাতক্ষীরা, সোনা মসজীদ, হিলি সীমান্ত দিয়ে।
সুন্দরী, গোলাপখাস, বেলুয়া জাতের এসব আম এমনভাবে পাকানো হয় যে, ওপরের রং দেখে যে কেউ আকৃষ্ট হন, কিন্তু কিনে হন প্রতারিত।
এসব আম কেনার পর ঘরে নিয়ে রাখলেও ২০-২৫ দিন একই রকম থাকে। অথচ সীমান্তে এসব আমের গুণাগুণ পরীক্ষারও সুযোগ নেই।
কারওয়ান বাজারের ফলের আড়তঘুরে দেখা গেলো, পাইকারি বাজারে বর্তমানে সাতক্ষীরার হিমসাগর বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। গোবিন্দভোগ ৮০ টাকা এবং মানিকগঞ্জের গুটি আম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।
আবহাওয়া বিবেচনায় বাগান পরীক্ষা করে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি কার্যালয় এবার মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে হিম সাগর ও গোবিন্দভোগ আম সংগ্রহের জন্য কৃষকদের অনুমোদন দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, গ্রীষ্মের অন্যতম ফল জামও উঠেছে বাজারে। তবে তা পরিমাণে খুবই কম। পুরো কারওয়ান বাজার ফলের আড়ত ঘুরে ৫ ক্যারেট পাকা জামের দেখা মিললো।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের এ জামের পাইকারি দাম বর্তমানে ১৬০ টাকা কেজি। তবে বাজারের সব জামই এখন নিরাপদ বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সামনের বৃষ্টির দিনগুলোতে জাম ভালো রাখতে রাসায়নিক ব্যবহারের প্রয়োজন হবে বলেও মনে করেন তারা।
বাজারে এখন দেখা মিলছে ২ প্রকার জামরুলেরও। একটি দেশি সাদা জামরুল ও অপরটি থাই লাল জামরুল। আড়তগুলোতে জামরুলের সরবরাহ মোটামুটি স্বাভাবিক আছে বলে বর্তমানে দাম একটু কমেছে। সাদা দেশি জামরুলের পাইকারি দাম ৬০ টাকা হলেও থাই লাল জামরুল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে।
সিলেটের জলঢূপী গ্রামের সেই বিখ্যাত জলঢূপী আনারস এখন শেষের দিকে। আড়তগুলোতে অবশ্য তা জলডুগি আনারস হিসেবেই পরিচিত। বর্তমানে বাজার দখলে আছে রাঙ্গামাটির ‘বেনারস’ জাতের লম্বাটে গড়নের আনারসের। কাঁটাযুক্ত পাতার এ আনারসের রং ও গন্ধ জলঢূপীর কাছাকাছি হলেও এগুলো স্বাদে কিছুটা টক এবং গড়ন ও সাইজে সম্পূর্ণ আলাদা। বাজারের রাঙ্গামাটির বেনারসি আনারস বর্তমানে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত প্রতিটি।
ময়মনসিংহ, গাজীপুর, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকার বাজারে আসতে শুরু করেছে গ্রীষ্মের আরেক টকমিষ্টির ফল কামরাঙ্গা। গরমের উপাদেয় ফলটির দামটিও বর্তমানে চড়া বলা যায়। পাইকারি বাজারে এক কেজি কামরাঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে।
লেবু এখনও কারও কারও কাছে কেবল সালাদের অংশ হলেও গরমের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই দিনে ২-১ গ্লাস লেবুর শরবত পান করেন। সারাবছর বাজারে বিভিন্ন জাতের লেবু পাওয়া গেলেও বর্তমান সময়টাই এ ফলের মৌসুম। তবে অন্য ফলের মতোই দাম ও চাহিদা দু’টোই বেশি এখন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে সাইজ অনুযায়ী ৫ টাকা থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস লেবু।
বাজারে এসেছে কাঁচা তাল এবং কাঁঠালও। বর্তমানে কাঁচা তাল পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা পিস। অন্যদিকে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিস ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
পাইকারি বাজারে কাঁচা আমও পাওয়া যাচ্ছে ৪ টাকা থেকে ১০ টাকা কেজি দরে। গরমে কাঁচা আমের জুস শরীর শীতলের জন্য খেতে পারেন যে কেউই।