নিজের সন্তানকে প্রথমবারের মতো দেখার অপেক্ষায় একটির পর একটি দিন গুনছেন যে হবু মা, নিত্যদিনই নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে। গর্ভাবস্থায় ত্বকের কিছু স্বাভাবিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। তবে নিয়মিত যত্নে ত্বকের স্বাভাবিক সতেজতা বজায় রাখা সম্ভব।
গর্ভে ছোট্ট শিশুর বেড়ে ওঠার প্রতিটি মুহূর্ত একজন মায়ের জন্য ‘বিশেষ’। এই বিশেষ সময়ে হবু মায়ের নিজের জন্যও চাই বিশেষ যত্ন। তবে যত রকম ব্যবস্থাই নেওয়া হোক না কেন, কিছু প্রাকৃতিক পরিবর্তন অনিবার্য। এমনটাই জানান বিশেষজ্ঞরা। মেছতার মতো কালচে দাগ হওয়াটা এমনই এক পরিবর্তন। সন্তান জন্মের পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের অধিকাংশ পরিবর্তন মিলিয়ে যায়। তবে তলপেটের কিছু দাগ আবার রয়েও যেতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইমদাদুল হক জানালেন, হবু মায়ের ত্বকের সুস্থতায় সুষম খাদ্যাভ্যাস ও বিশ্রাম প্রয়োজন। এ ছাড়া ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। যেমন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন। এই সময়টায় পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় ত্বক কখনো ভেজা অবস্থায় রাখা যাবে না। ভেজা ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে থাকা যাবে না। ত্বকের যত্নে ক্ষারবিহীন বা কম ÿক্ষার যুক্ত ময়েশ্চারাইজিং সাবান ব্যবহার করার পরামর্শ দিলেন এই চিকিৎসক। এতে ত্বকের শুষ্কতা অনেকটাই এড়ানো যায়। এ ছাড়া নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে তলপেটে ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক থাকলে তলপেটের ত্বকে দাগ বেশি হতে পারে। এ জন্য ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে জলপাই তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগানো যায়।
হারমনি স্পার আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা জানালেন, এই সময় প্রতিদিন তেল মালিশ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া কিছু প্যাক ও স্ক্রাব ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে রাসায়নিক সমৃদ্ধ উপকরণের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করাই ভালো। প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে ত্বকের যত্ন নেবার পদ্ধতি জানালেন রাহিমা সুলতানা। চালের গুঁড়া, টমেটোর রস, টক দই ও হলুদের মিশ্রণ স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে একবার এই মিশ্রণ দিয়ে স্ক্রাবিং করা ভালো। মসুর ডাল, দুধ, মধু, গাজরের রস এবং ডিমের সাদা অংশ দিয়েও প্যাক তৈরি করতে পারেন। সপ্তাহে একবার এ ধরনের প্যাক ব্যবহার করা যায়। এই সময়ে মুখ ও গলায় কিছু দাগ হতে পারে। এসব স্থানে দুধ ও মধুর মিশ্রণ লাগানো যেতে পারে।