জাতিসংঘ বিশ্বের প্রায় দুই শতাধিক রাষ্ট্রের শান্তি, উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশ, মানবাধিকারসহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করে। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে এটি আন্তর্জাতিক উচ্চতার একটি অনন্য সংস্থা। বিশ্বের যেখানেই যুদ্ধ বিগ্রহ, হিংসা, হানাহানি, দ্বন্দ্ব, সংঘাত সেখানেই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় অভিভাবকের ভূমিকা।
বৃহত্তর স্বার্থে এই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনঃগঠন ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে, বিরোধ-বিবাদ নিরসনে, শান্তি রক্ষায়, বিভিন্ন দেশে এইডস, জিকা ভাইরাসের মতো মারণ্যব্যাধির বিরুদ্ধে প্রচারণা, অর্থসহায়তা দেওয়া, ক্ষুধা-দারিদ্রোর বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৪৫ থেকে ২০১৭, এই ৭২ বছরে ৯ জন জাতিসংঘের মহাসচিব পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৫ সালের ১৫ এপ্রিল এ সংস্থার নীতিমালা তৈরীর লক্ষ্যে আমেরিকার সানফ্রাসিসকোতে মিলিত হবার সিদ্ধান্ত হয়। সানফ্রাসিসকোতে ৫০ জাতির প্রতিনিধিরা মিলিত ৪৯ জন বিশ্বখ্যাত রোটারিয়ানের নেতৃত্বে জাতিসংঘের চার্টার নির্ধারণ করেন। ১৯৪৫ সালের ২৬ জুলাই ৫১টি দেশের স্বাক্ষরে চার্টার পাশ হয়। এ চার্টারের ভিত্তিতে পৃথিবীতে স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ জন্মলাভ করে।
জাতিসংঘের ৬টি মূল সংস্থা রয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনক্রমে সাধারণ পরিষদের গোপন ভোটে জাতিসংঘের মহাসচিব নিযুক্ত হন। পাঁচ বছরের জন্য নিযুক্ত হন মহাসচিব। মহাসচিব জাতিসংঘের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। মহাসচিবকে বিশ্ব শান্তির অভিভাবকও বলা হয়। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত মহাসচিবগণ হলেন- ১) ট্রিগভেলী: তিনি জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব। ১৮৯৬ সালে তিনি নরওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালের ২ ফেব্র“য়ারি জাতিসংঘের মহাসচিব নিযুক্ত হন তিন। ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি মারা যান। ২) দ্যাগ হ্যামারশোল্ড: তিনি ১৯০৫ সালে সুইডেনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালের ১০ এপ্রিল জাতিসংঘের দ্বিতীয় মহাসচিব নিযুক্ত হন তিন। ১৯৬১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। উত্তর রোডেশিয়ায় (বর্তমান জাম্বিয়া) একটি বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। ৩) উ-থান্ট: ১৯০৯ সালে তিনি মায়ানমারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬১ সালের ৩০ নভেম্বর জাতিসংঘের মহাসচিব নিযুক্ত হন। ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘের তৃতীয় মহাসচিব। ১৯৭৪ সালে তিনি মারা যান। ৪) কার্ট-ওয়াল্ডহেইম: ১৯১৮ সালে অষ্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালের ১ জানুয়ারি তিনি জাতিসংঘের ৪র্থ মহাসচিব নিযুক্ত হন। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালে তিনি মারা যান। ৫) পেরেজ দ্যা কুয়েলার: ১৯২০ সালে পেরুতে জন্মগ্রহণ করেন। জাতিসংঘের পঞ্চম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পান ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৬) বুট্রোস-বুট্রোস ঘালি: তিনি ১৯২২ সালে মিশরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি জাতিসংঘের মহাসচিব নিযুক্ত হন। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ৬) কোফি আনান: তিনি ১৯৩৮ সালে ঘানায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি জাতিসংঘের ৭ম মহাসচিব নিযুক্ত হন তিনি। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি মহাসবিচের দায়িত্ব পালন করেন। ৮) বান্ কি-মুন: ১৯৪৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি তিনি জাতিসংঘের ৮ম মহাসচিব নিযুক্ত হন। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ৯) জাতিসংঘের নবম মহাসচিব হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন অ্যান্তেনিও গুতেরেস। তিনি ১৯৪৯ সালে পর্তুগালে জন্মগ্রহণ করেন। গত ১৩ অক্টোবর ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদ এ সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তিনি ৫ বছরের জন্য মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৬৭ বছর বয়সী গুতেরেস ১৯৯৫-২০০২ সাল পর্যন্ত পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৫-২০১৫ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ছিলেন। ৬ অক্টোবর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ১৩-০ ভোটে তাঁর মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বিশ্বজুড়ে গরিবি হটাতে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ থেকে হাতে নিয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান পনেরো বছর মেয়াদি ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেন জাতিসংঘ সদর দফতরে। বিপুল করতালি আর হর্ষধ্বনির মধ্য দিয়ে গৃহীত হয় ১৬৯টি উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা।
লক্ষ্যমাত্রাটি সুদুরপ্রসারী ও গণকেন্দ্রিক, বিশ্বজনীন রূপান্তর সৃষ্টিকারী লক্ষ্য ও টার্গেট অন্তর্ভূক্ত, ‘গ্লোবাল গোলস’ বা ‘২০৩০ এজেন্ডা’ হিসেবে অবহিত। এজেন্ডাটির উদ্দেশ্য হলো বিশ্বমানবতা সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন যা বিশ্বব্যাপী শান্তি, স্বাধীনতা ও কার্যকর অংশীদার প্রতিষ্ঠিত করবে। ক্ষুধা ও দারিদ্রো থেকে মুক্তি পাবে মানুষ এবং অর্জিত হবে পরিবেশের ভারসাম্য। এসব দুঃসাহসী ও উচ্চাকাক্সক্ষী অঙ্গীকার আমাদের টেকসই ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে এবং পুরো বিশ্বে ব্যাপক রূপান্তর ঘটবে। ১৫ বছর মেয়াদি এজেন্ডাটির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ২০১৬ এর ১ জানুয়ারি থেকে।
২০৩০ সালের লক্ষ্য এজেন্ডায় সবার ও সব দেশের জন্য প্রযোজ্য ১৭টি লক্ষ্য অন্তর্ভূক্ত: (১) সব ধরনের দারিদ্র দূর করা (২) ক্ষুদা দূর করা (৩) সবার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবন ও কল্যাণ নিশ্চিত করা (৪) সবার জন্য অন্তর্ভূক্তিমূলক ও মানসম্মত এবং জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ নিশ্চত করা (৫) নারীদের সম-অধিকার এবং তাঁদের ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা (৬) সবার জন্য টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ও পয়নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা (৭) সবার জন্য সুলভ, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও আধুনিক জ্বালানি নিশ্চিত করা (৮) সবার জন্য স্থায়ী, অন্তর্ভূক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনেতিক কার্যক্রম উৎসাহিত, পরিপূর্ণ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান এবং উপযুক্ত কর্মের নিশ্চয়তা প্রদান করা (৯) স্থিতিশীল অবকাঠামো তৈরি, অন্তর্ভূক্তিমূলক এবং টেকসই শিল্পায়ন ও উদ্ভাবন উৎসাহিত করা (১০) অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বৈষম্য কমিয়ে আনা (১১) নগর ও জনবসতিগুলো অন্তর্ভূক্তিমূলক, নিরাপদ, স্থিতিশীল ও টেকসই করা (১২) টেকসই উৎপাদন ও ভোগ নিশ্চিত করা (১৩) জলবায়ু পরিবর্তন এবং তার বিরূপ প্রভাবের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা (১৪) পরিবেশ উন্নয়নে সাগর, মহাসাগর ও সামুদ্রিক সম্পদের সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা (১৫) স্থলজ বাস্তুতন্ত্রের সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন ও টেকসই ব্যবহার, মরুকরণ প্রতিহত এবং ভূমির মানে অবনতি রোধ ও জীববৈচিত্র্যের রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা ১৬) টেকসই উন্নয়নে শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক সমাজ তৈরি, সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুযোগ এবং সর্বস্তরে কার্যকর, দায়বদ্ধ ও অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, (১৭) টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নের পদ্ধতিগুলো শক্তিশালী এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব জোরদার করা। এই ১৭টি লক্ষ্যের অধীনে রয়েছে সুস্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট, সময়বদ্ধ ও পরিমাপযোগ্য ১৬৯ টি টার্গেট । টার্গেট বাস্তবায়নে প্রয়োজন বিশ্বব্যাপী দক্ষ শ্রমশক্তি বা ডিপ্লোমা পেশাজীবী।
টেকসই উন্নয়ন (Sustainable Development Goals) একটি বিশেষ কর্মকাণ্ড, এই ভিশন বাস্তবায়নে প্রশিক্ষিত জনবলের প্রয়োজন। বাংলাদেশ সহ সমগ্র বিশ্বের বেকারত্ব অন্যতম প্রধান সমস্যা হওয়ায় বিশ্ব উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বেকার সমস্যার মাঝে ডুবে থাকার কারণে আজ যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে সন্ত্রাসসহ নানা সমাজবিরোধী কাজ। শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত, দক্ষ-অদক্ষ, নারী-পুরুষ গ্লানিময় বেকারত্ব জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে এক সময় বিপথগামী হয়ে পড়ে। বেছে নেয় সন্ত্রাস, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা সমাজবিরোধী কাজ। অনেকেই হতাশার সাগরে হাবুডুবু খেতে নানা নেশাদ্রব্য সেবনের মাধ্যমে জীবন ধ্বংস করে দেয়। বিশ্বের উন্নতি ও প্রগতির চাকাকে সামনে এগিয়ে নেয়ার গুরুদায়িত্ব পালন করে তারাই। বিশ্বের যুব সমাজকে কর্মক্ষম জনশক্তিতে রূপান্তর করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা বিশ্ববাসীর প্রধান কাজ হওয়া উচিত। দেশে দেশে বেকারত্ব নিরসনে মনোযোগী হলে গ্লোবাল গোলস বাস্তবায়ন করা কোন কঠিন ব্যাপার নয়।
টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি হলো ডিপ্লোমা শিক্ষা। নাগরিকদের ডিপ্লোমা শিক্ষা ও দক্ষতা যত বাড়বে অর্থনৈতিক উন্নয়নও তত বেশি গতি পাবে। দরিদ্র মানুষ কখনই ডিপ্লোমা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়নি। অর্থনীতিবিদ রবাট পিস্টনের মতে ‘অর্থনেতিক বৈষম্যের কারণ, দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের ডিপ্লোমা শিক্ষা ও আত্মিক উন্নতিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ না করা। বাংলাদেশে সামাজিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মত ‘ডিপ্লোমা শিক্ষার মূল্যয়ন দেশ ও জাতির উন্নয়ন’ শ্লোগান ধরে ২৫ নভেম্বর জাতীয় ডিপ্লোমা শিক্ষা দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন শুরু হয়। ২০১৫ সালের জাতিসংঘের ভিশন ২০৩০ অনুসারে ‘টেকসই উন্নয়নে ডিপ্লোমা শিক্ষা’ (Sustainable Development Goals For Diploma Education) শ্লোগান নিয়ে ২য় বারের মতো জাতীয় ডিপ্লোমা শিক্ষা দিবস ২০১৫ উদযাপিত হয়।
বাংলাদেশে এবং বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন সুদূরপ্রসারী ও টেকসই করতে হলে এই অগ্রযাত্রায় কন্যাশিশু ও নারীদের সহ যুবদের ডিপ্লোমা শিক্ষার মাধ্যমে কর্মক্ষম করে অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২৫ নভেম্বর ২০১৬ বাংলাদেশে ৩য় বারের মতো জাতীয় ডিপ্লোমা শিক্ষা দিবস (National Diploma Education Day) আন্তর্জাতিকভাবে সাড়ম্বরে উদযাপন করা হয়। ২০১৬ এর শ্লোগান ‘গ্রাম উন্নয়নে বিভাগীয় ডিপ্লোমা শিক্ষা বোর্ড’ (Village Development on Diploma Education Board) নির্ধারণ করে ব্যাপক প্রচারণা করা হয়েছিল।
ব্যাপক আলোচনা, পর্যালোচনা, প্রচারণার ফলে বাংলাদেশে ডিপ্লেমাা শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ডিপ্লোমা শিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশের প্রশাসনিক ৮টি বিভাগে ৮টি ‘ডিপ্লোমা শিক্ষা বোর্ড’ প্রতিষ্ঠার ভিত রচনা হয়েছে। বিভাগীয় ডিপ্লোমা শিক্ষা বোর্ডের সুনিপুণ ব্যবস্থাপনায় এসএসসি উত্তীর্ণ তরুণদেরকে ডিপ্লোমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে ১০টি সরকারি/বেসরকারিভাবে কৃষি, ভেটেরিনারি, লেদার, পলিটেকনিক, টেক্সটাইল, মেডিক্যাল টেকনোলজি, নার্সিং, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, মেডিক্যাল ও ডেন্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
রাবার, মোবাইল ব্যাংকিং, এয়ারহোস্টেজ, পর্যটন, সাংবাদিকতা, বিমান পরিচালনা, সাবমেরিন, মহাকাশযান, নিউক্লিয়ার ইত্যাদি বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্সসহ সকল পণ্য ও পেশায় কমপক্ষে ৫০০ (পাচঁশত) নতুন ডিপ্লোমা কোর্স চালু হবে। ডিপ্লোমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ ও ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার ডিপ্লোমা শিক্ষা প্রসারে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পাদন করেছে। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারিদের মেধা ও শ্রমের সংমিশ্রণে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা দিকদর্শন পাবে।
আগামী ২৫ নভেম্বর ২০১৭ বাংলাদেশে ৪র্থ বারের মতো ‘জাতীয় ডিপ্লোমা শিক্ষা দিবস’ (National Diploma Education Day) এবং বিশ্ব ডিপ্লোমা শিক্ষা (2nd World Diploma Education Day 2017) আন্তর্জাতিভাবে সাড়ম্বর উদযাপন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। এবারেও গ্রাম উন্নয়নে বিভাগীয় ডিপ্লোমা শিক্ষা বোর্ড (Village Development For Diploma Education Board) পুনঃনির্ধারণ করে এ ব্যাপারে কর্মসূচি চলমান রাখা হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে ২য় বিশ্ব ডিপ্লোমা শিক্ষা দিবস 2nd World Diploma Education Day 2017 জাতিসংঘের উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী উদযপিত হলে বিশ্বব্যাপী এক ও অভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্স চালু হবে। নতুন নতুন বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স ও তৃণমূলে ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হবে। প্রতিষ্ঠিত ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটগুলো সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিক হবে। পথহারা দিকনির্দেশনাহীন তরুণরা এইসব ইনস্টিটিউট ডিপ্লোমা শিক্ষা অর্জন করে স্বউদ্যোগে শিল্প কারখানা, হাসপাতাল, খামার প্রতিষ্ঠা করে স্বাবলম্বী হবে। তাতেই জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার লক্ষপূরণ হবে। দিবসের মৌল চেতনার পরিপূরক লক্ষ্য বাস্তবায়নে শ্রদ্ধাশীল হবে।
মো. আবুল হাসান, সভাপতি
খন রঞ্জন রায়, মহাসচিব
ডিপ্লোমা শিক্ষা গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ।
৮৭, চট্টেশ্বরী রোড, চকবাজার, চট্টগ্রাম।