Close Menu
    Facebook X (Twitter) Instagram
    সর্বশেষ আপডেট »
    • ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের মৃত্যু
    • ‘আমি তো সিরিয়াল করতে আসিনি’
    • স্মার্টফোনের ধারণা বদলে দিতে পারে টেসলা পাই ফোন
    • স্কলারশিপ নিয়ে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ
    • ভারতে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক
    • মালয়েশিয়ার বিখ্যাত পেট্রোনাস টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড
    • বাড়ির খুদেকে বানিয়ে দিন এই সুস্বাদু পকোড়া
    • থাইরয়েডের ১০ লক্ষণ
    Facebook X (Twitter) LinkedIn Pinterest RSS
    Leading Bangla News Portal | BartaBangla.com
    • প্রচ্ছদ
    • বাংলাদেশ
    • বিশ্বজুড়ে
    • অর্থনীতি
    • খেলা
    • জীবনধারা
    • টিপ্স-ট্রিক্স
    • বিনোদন
    • স্বাস্থ্য
    • প্রযুক্তি
    • প্রবাসকথা
    • অন্যান্য
      • বিদেশে উচ্চশিক্ষা
      • চাকরির খবর
      • ভিসাতথ্য
      • মজার খবর
      • ধর্ম
      • রেসিপি
    Leading Bangla News Portal | BartaBangla.com
    Home » জেনে নিন বাংলাদেশের সংবাদপত্রের জনক সম্পর্কে
    বিবিধ May 7, 2016

    জেনে নিন বাংলাদেশের সংবাদপত্রের জনক সম্পর্কে

    বিবিধ May 7, 20169 Mins Read
    Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
    Follow Us
    Facebook Google News

    Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/hrqwaeru/public_html/wp-content/themes/smart-mag/partials/single/featured.php on line 78
    বার্তাবাংলা ডেস্ক »

    বাংলাদেশের সংবাদপত্রের জনক ও গ্রামীণ সাংবাদিকতার প্রবাদ পুরুষ কাঙাল হরিনাথের সংবাদপত্র ‘গ্রামবার্ত্তা’ প্রথম বাংলাদেশের সংবাদপত্র। চলমান সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতায় তার আদর্শ যেন আজ রূপকথার কাহিনীর মতো। কিন্তু তার সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠাবানেই একজন প্রকৃত নির্ভীক সাংবাদিকের আদর্শ হওয়া উচিত। তার জীবন দর্শন থেকে তাই জানা যায়।

    ঊনবিংশ শতাব্দীর কালজয়ী সাধক, সংবাদিক, সাহিত্যিক, সমাজসেবক ও নারী জাগরণের অন্যতম দিকপাল কাঙাল হরিনাথ মজুমদার। তৎকালীন সময়ে তিনি ইংরেজ নীলকর, জমিদার, পুলিশ ও শোষক শ্রেণির বিরুদ্ধে হাতে লেখা পত্রিকা ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’র মাধ্যমে লড়াই করেছেন। অত্যাচার ও জলুমের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপসহীন কলমযোদ্ধা। ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার ও সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে লিখে নির্ভীক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ হিসেবে ১৮৫৭ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর প্রাচীন জনপদের নিভৃত গ্রাম থেকে তিনি হাতে লিখে প্রথম প্রকাশ করেন মাসিক গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা। হাজারো বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তিনি এ পত্রিকাটি প্রায় এক যুগ প্রকাশ করেছিলেন। মাসিক থেকে পত্রিকাটি পাক্ষিক এবং পরবর্তীতে ১৮৬৩ সালে সাপ্তাহিক আকারে কলকাতার ‘গিরিশচন্দ্র বিদ্যারতœ’ প্রেস থেকে নিয়মিত প্রকাশ করেন। এতে চর্তুদিকে সাড়া পড়ে যায়। ১৮৭৩ সালে হরিনাথ মজুমদার সুহৃদ অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়’র বাবা মথুরানাথ মৈত্রেয়’র আর্থিক সহায়তায় কুমারখালীতে এমএন প্রেস স্থাপন করে ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’র প্রকাশনা অব্যাহত রাখেন। এই খ্যাতিমান সাধক পুরুষ কুষ্টিয়ার কুমারখালী শহরে ১২৪০ সালের ৫ শ্রাবণ (ইংরেজি ১৮৩৩) কুষ্টিয়া জেলার (তদানীন্তন পাবনা জেলার নদীয়া) কুমারখালী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হলধর মজুমদার এবং মা কমলিনী দেবী। তিনি ছিলেন মা-বাবার একমাত্র সন্তান। তার জন্মের পর শৈশবেই মাতৃ ও পিতৃবিয়োগ ঘটে। এরপর দারিদ্র্যের বাতাবরণে বেড়ে উঠতে থাকেন কাঙাল হরিনাথ। তার ৬৩ বছরের জীবনকালে তিনি সাংবাদিকতা, আধ্যাত্ম সাধনাসহ নানা সামাজিক আন্দোলন এবং কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এই কালজয়ী সাধকপুরুষ ও সু-সাহিত্যিক বাংলা ১৩০৩ সালের ৫ বৈশাখ (১৮৯৬ সাল, ১৬ এপ্রিল) নিজ বাড়িতে দেহত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি রেখে যান তিন পুত্র, এক কন্যা এবং স্ত্রী স্বর্ণময়ীকে। গ্রামীণ সাংবাদিকতা এবং দরিদ্র কৃষক ও সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের একমাত্র অবলম্বন কাঙাল হরিনাথের স্মৃতি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। অথচ তিনি ছিলেন সংগ্রামী এক ভিন্ন নেশা ও পেশার মানুষ।

    কাঙাল হরিনাথ নিজেই গ্রামগঞ্জ ঘুরে সংবাদ সংগ্রহ করতেন এবং পাঠকদের হাতে তুলে দিতেন একটি বলিষ্ঠ পত্রিকা। সাহসী এ কলম সৈনিক ১৮৭২ সালে দুঃখী মানুষের পক্ষে কালাকানুনের বিরুদ্ধে পত্রিকার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান। গ্রামে বসবাস করেও উনিশ শতকের বুদ্ধিজীবী কাঙাল হরিনাথ ১৮৬৩ সালে নীলকর সাহেব অর্থাৎ শিলাইদহের জোড়াসাঁকোর ঠাকুর জমিদারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কৃষকদের পক্ষে প্রবন্ধ লিখে তোলপাড় সৃষ্টি করেন। এ কারণে ঠাকুর জমিদার হরিনাথকে খুন করার জন্য ভাড়াটে গুণ্ডা পাঠান। কিন্তু বাউল সাধক লালন ফকির নিজেই তার দলবল নিয়ে কাঙালকে রক্ষা করার জন্য জমিদারের লাঠিয়ালদের প্রতিরোধ করেন। লালন ফকিরের সঙ্গে তার যোগাযোগ থাকার কারণেই তিনি রক্ষা পেয়েছিলেন। অত্যাচার-জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি হরিনাথ সে সময় ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’কে ঘিরে লেখক গোষ্ঠী তৈরি করেন। ফলে এ পত্রিকার মাধ্যমে ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়, সুসাহিত্যিক রায় বাহাদুর জলধর সেন, দীনেন্দ্র কুমার রায়, মীর মশাররফ হোসেন, শিবচন্দ্র বিদ্যানর্ব প্রমুখ সাহিত্যিক সৃষ্টি করে গেছেন। এছাড়া দেড়শ বছর আগে সাহিত্য আড্ডা বসিয়ে তিনি যে জ্ঞানের দ্বীপ জ্বেলেছিলেন তা ছিল অনন্য এক দৃষ্টান্ত। সে সময় ওই আড্ডায় নিয়মিত সময় দিতেন মীর মশাররফ হোসেন, অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় ও বাউল সম্রাট লালন ফকির। বাংলা সাহিত্যের কবি ঈশ্বর গুপ্ত এবং কাঙাল হরিনাথের ভূমিকা সম্পর্কে বলা হয়েছে, কবি ঈশ্বর গুপ্ত রাজধানী কলকাতার বৃহত্তর গুণী সমাজে অবস্থান করেও প্রাচীন ও আধুনিক যুগের সন্ধিক্ষণে তিনি রক্ষণশীল মনোভাব পোষণ করেছেন। অথচ কাঙাল হরিনাথ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মতো একটি ছোট শহরে বসবাস করেও তার চেয়ে অনেক বেশি আধুনিক, উদার, নির্ভীক ও যুক্তিপূর্ণ মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু উপযুক্ত মূল্যায়ন এবং প্রচারের অভাবে তিনি ‘কাঙাল’ ভনিতায় বাউল গান রচনাকারী হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি বাউল সাধক ছিলেন না। তিনি ছিলেন উদার হৃদয়ের সাধক পুরুষ। এ কারণে কেউ কেউ তাকে ‘ব্রহ্ম’ ধর্মাবলম্বীও মনে করতেন।

    গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ছিল নিতান্তই নির্ভীক সাংবাদিকতার আদর্শ পত্রিকা। পাবনার তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মি. হামফ্রে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারকে এক চিঠিতে লিখেছিলেন- ‘এডিটর, আমি তোমাকে ভয় করি না বটে, কিন্তু তোমার লেখনীর জন্য অনেক কুকর্ম পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি।’ এই উক্তির পেছনে যে কারণটি ছিল, তা হলো- এক দুখিনী মায়ের গরু ছিল খুবই লোভনীয়। তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের গরুটি দেখে পছন্দ হয়ে যায়। পরে তারই নির্দেশে গরুটি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে এ ঘটনা জানতে পারেন সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ। তিনি গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকায় ‘গরুচোর ম্যাজিস্ট্রেট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেন। সংবাদ দেখে ম্যাজিস্ট্রেট খুবই রাগান্বিত হলেন। ছুটে এলেন হরিনাথের প্রেসে। সে সময় হরিনাথ ছিলেন কুামারখালী শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে বাটিকামারা গ্রামের তৎকালীন ‘ঝরেপুল’ খ্যাত জঙ্গলের মাঝে কালিমন্দিরে ধ্যানমগ্ন। ম্যাজিস্ট্রেট ঘোড়ায় চড়ে চাবুক নিয়ে ছুটলেন সেখানে। কাঙাল হরিনাথকে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় দেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর কয়েকবার ডাকেন। কথিত আছে, কোনো সাড়া না পাওয়ায় তিনি চাবুক মারেন। অথচ একটিবারও কাঙালের পিঠে চাবুক স্পর্শ না করায় ম্যাজিস্ট্রেট হতবিহŸল হয়ে পড়েন এবং ফিরে যান। ম্যাজিস্ট্রেট তার দুর্ব্যবহারের জন্য পরে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন বলেও শোনা যায়। এ ঘটনাটি আজো সনাতন মতাদর্শীদের মাঝে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়।

    কাঙাল হরিনাথ শৈশবে বাবা-মা হারিয়ে চরম দরিদ্রতার মধ্যে সামান্য লেখাপড়া শিখতে সক্ষম হন। অবস্থাসম্পন্ন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও কিশোর বয়সেই তিনি জীবন জীবিকার জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। কর্মজীবনের শুরুতেই তিনি দু’পয়সা বেতনে কুমারখালী বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি নেন। দিনের বেলায় খরিদ্দারের তামাক-সাজা, কাপড়-গোছানো এবং সন্ধ্যায় তিনি দোকানের খাতা লেখার কাজ করতেন। এরপর কিছুদিন মহাজনের গদিতে খাতা লেখা, ৫১টি কুঠীর হেড অফিস কুমারখালীর নীলকুঠিতে শিক্ষানবিস হিসেবে চাকরি এবং পরে শিক্ষকতার কাজ করেন। নানা অত্যাচার, অনাচার সইতে না পেরে তিনি কোনো চাকরিই কয়েক দিনের বেশি করতে পারেননি। এরপর ঈশ্বর চন্দ্র গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে ইংরেজ জমিদারদের অত্যাচারের কাহিনী লিখে পাঠাতে শুরু করেন। ১৮৫১ সালে হরিনাথ প্রথম উপন্যাস গ্রন্থ ‘বিজয় বসন্ত’ প্রকাশ করেন। ১৮৫৪ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি কুমারখালীতে একটি বাংলা স্কুল স্থাপন করেন। এখানে তিনি অবৈতনিক শিক্ষকতার চাকরি করতে থাকেন এবং ইংরেজি শিক্ষার পদ্ধতি অনুসারে পাঠদান করতেন। বিদ্যালয়ের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে ক্রমেই ছাত্রসংখ্যা বাড়তে থাকে। বিদ্যালয়টি সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত হয়। প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাঙাল হরিনাথের বেতন নির্ধারণ হয় ২০ টাকা। তবে তিনি নিম্ন শ্রেণির শিক্ষকদের বেতন বাড়াতে নিজে পনেরো টাকা বেতন গ্রহণ করেন। পরে তিনি মেয়েদের শিক্ষাদানের জন্য ১৮৬০ সালে কুমারখালীতে নিজ বাড়িতে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। রক্ষণশীল হিন্দুসমাজ যখন নারী-প্রগতি ও স্ত্রীশিক্ষার বিপক্ষে, হরিনাথের সাহিত্য ও সাংবাদিকতার গুরু কবি ঈশ্বর গুপ্তও যখন এর বিরোধী ছিলেন, তখন কুমারখালীতে হরিনাথ পল্লীতে স্ত্রী শিক্ষায় ব্রত হয়েছিলেন। সেই বিদ্যালয়টিই এখন কুমারখালীর সুনামধন্য বালিকা বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

    লালন প্রভাবে কাঙাল হরিনাথ অসংখ্য বাউল গান রচনা করেছেন। তিনি বাউল গান রচনাকারী হিসেবে অনেকটাই সার্থক। তবে লালন ফকির একবার তার বাউল গান শুনে বলেছিলেন, এতে নুন কম হচ্ছে। কাঙালের রচিত গান শুনে তৎকালীন বহু লোককে আবেগে অশ্র বিসর্জন করতে দেখা গেছে। এ সম্পর্কে সুকুমার সেন বলেছেন, রবীন্দ্রনাথের আগে বাউল গান কাঙাল হরিনাথই সৃষ্টি করেছিলেন। তার বহু বাউল গান আজো গ্রামে-গঞ্জে বাউল শিল্পীদের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়। কাঙাল নিজে বাউল না হয়েও বাউল গান রচনা করেছিলেন। তবে লালন সাঁইয়ের প্রচণ্ড প্রভাব মূলত কাঙালকে বাউল গান রচনা করতে সহায়তা করেছিল। লালন সাঁই বহুবার কুমারখালীর কাঙাল কুটিরে গেছেন। কাঙালও লালন শাহের ছেউড়িয়া গ্রামের আখড়া বাড়িতে এসেছেন। এর দলিলসহ প্রমাণাদি প্রকাশ করেছেন বরেণ্য গবেষক ডক্টর আবুল আহসান চৌধুরী। তিনি ‘কাঙাল হরিনাথের জীবনীমালা গন্থে’ এবং ‘লালন সাঁইয়ের সন্ধানে’ বইয়ে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। তার জীবনীগ্রন্থমালা বইয়ে উলেখ করেছেন- হরিনাথ বাউলগানের একটি ‘ঘরানা’ সৃষ্টি করেছিলেন। কাঙাল হরিনাথের বাউলাঙ্গের গান রয়েছে প্রায় হাজারের কোটায়। তাঁর গান শুনে অনেকে হরিনাথ বেদতাও বলেছে। বাঙলা ১২৮৭ সালে ফিকিরচাঁদ ফকিরের বাউলগানের দল গঠন করেন তিনি। এই দলের গান শুনতে এবং নিজে গান করতে কাঙাল কুটিরে আসতেন লালন ফকির। এতে ফিকিরচাঁদ দলের ব্যাপক প্রসার ঘটে। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই বাউলগান শুনতে আসত।

    কাঙাল হরিনাথ এবং বাউল সম্রাট লালন ফকির মানব দরদি, উদার ও অসম্প্রদায়িকতার পথিকৃৎ। কাঙাল হরিনাথ একজন প্রকৃত এবং নিষ্ঠাবান সাংবাদিক হিসেবে বিশেষভাবে আলোচিত। তার মতো একজন অতি সাধারণ দরিদ্র লোক তৎকালে এতটা নির্ভীকভাবে পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে জনসেবা ও সাহিত্য সাধনা করে গেছেন তা একালে খুবই কম দেখা যায়। তবে লালন ফকিরের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা সাধন এবং বাউল গান রচনায় বিশেষ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। একদিকে রবীন্দ্রসমুদ্র, অন্য দিকে কাঙাল হরিনাথ, লালন ফকির এবং মীর মশাররফের ত্রিভূজাকার অবস্থান সাহিত্য সাধনা এবং আদান প্রদানের এক তরঙ্গ বিশেষিত হয়।

    বিশুদ্ধ-শিল্প প্রেরণার সাহিত্যচর্চায় ব্রত ছিলেন কাঙাল হরিনাথ। একই সঙ্গে তিনি বেশ কিছু উত্তরসূরিও রেখে যেতে সক্ষম হন। তাদের রচনা এবং কাঙালের রচনা আজো বাংলা সাহিত্যে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হয়ে আছে। তার সৃষ্টি ও চর্চা নিয়ে এখনো অনাবিষ্কৃত হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে তা হলো- তিনি ব্রহ্ম সমাজী ছিলেন কিনা জানা যায় না। তবে তার গভীর ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানা যায়। কেউ কেউ হরিনাথ প্রথম জীবনে ব্রহ্ম এবং শেষ জীবনে এসে হিন্দু হয়েছিলেন। ব্রাহ্ম-প্রচারক বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর সঙ্গে কাঙালের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল বলেও তার লেখাতেও এর প্রমাণ মেলে। তবে স্পষ্টভাবে এর প্রমাণ না মিললেও শেষ জীবনে এসে তিনি ধর্মীয় চেতনা এবং সাধনতত্ত্বে আত্মমগ্ন হয়েছিলেন। এই তান্ত্রিক সাধক পুরুষের শিক্ষাজীবন ছিল খুবই সীমিত। গুরু মশাইয়ের কাছে শিক্ষা গ্রহণে উদাসীন কাঙাল হরিনাথ শিক্ষা নিতেন প্রকৃতি থেকে। বন্ধনহীন উদ্দমতায় কাটতে থাকে তার বাল্যকাল। পরে কুমারখালীতে ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা হলে সেখানে ভর্তির পর অর্থাভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনি বাংলা পাঠে ছিলেন ভীষণ পটু। এতে আত্মীয়রা লেখাপড়া শেখানোর ব্যাপারে মনোযোগী ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর সম্ভব হয়নি। তার জীবনের সবসময়ই ছিল গুরুত্বপূর্ণ সময়। সংগ্রামে অবতীর্ণ এই সাধক পার করেছেন জীবনের প্রতিটি মুহ‚র্ত। তবে তার গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা পত্রিকাটি গ্রামীণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। কৃষক-প্রজা-রায়ত-শ্রমজীবী এবং মধ্যবৃত্তের মানুষের সবচেয়ে বেশি আনুক‚ল্য পেয়েছিল তার এই পত্রিকাটি। পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে একমাত্র আশ্রয় ছিল কাঙাল হরিনাথ। স্বদেশ শিল্প-বাণিজ্য বিকাশের এক পুরধাও ছিলেন তিনি। এই মহান ব্যক্তিত্ব সংগ্রামীময় জীবনের অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে বাংলা ১৩০৩ সালের ৫ বৈশাখ (১৮৯৬ সাল, ১৬ এপ্রিল) কাঙাল হরিনাথ কুমারখালী শহরের কুণ্ডুপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে দেহত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি তিন পুত্র, এক কন্যা এবং স্ত্রী স্বর্ণময়ীকে রেখে ৬৩ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। উনিশ শতকে কুষ্টিয়ায় কাঙালের মতো এমন কৃতী পুরুষ আর দ্বিতীয়টি ছিলেন না। কুমারখালীতে একদিন কাঙাল হরিনাথ যে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়েছিলেন, তার মৃত্যুর পর তা নিভে যায়।

    রচনাবলী :

    কাঙাল হরিনাথ মজুমদার শুধু একজন সফল সাংবাদিকই ছিলেন না। তিনি কবিতা, উপন্যাস ও শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তকও লিখেছেন। এ ছাড়া রচনা করেছেন নাট্যগ্রন্থ ও বিভিন্ন প্রবন্ধ গ্রন্থ। বিভিন্ন গবেষকদের লেখা থেকে জানা যায়, হরিনাথ মাজুমদার ৪০টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। অপ্রকাশিতই রয়েছে বেশিরভাগ। তার গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘বিজয় বসন্ত’ একটি সফল উপন্যাস। অনেকে মনে করেন এই উপন্যাসটিই বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম উপন্যাস। আর এর জনক কাঙাল হরিনাথ। টেকচাঁদ ঠাকুরের ‘আলালের ঘরে দুলাল’ উপন্যাসটিও বাংলায় প্রথম হিসেবে ধরা হয়। এ নিয়ে শিবনাথ শাস্ত্রী, রামতনু লাহিড়ী ‘তৎকালীন বঙ্গ সমাজ’ গ্রন্থে কাঙাল হরিনাথ সম্পর্কে লিখেছেন- ‘কুমারখালীর হরিনাথ মজুমদার প্রণীত বিজয় বসন্ত ও টেকচাঁদ ঠাকুরের আলালের ঘরে দুলাল বাংলার প্রথম উপন্যাস।’ তৎকালীন সময়ে ‘বিজয়-বসন্ত’ পাঠক মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছিল। কাঙাল হরিনাথের সাহিত্যগুণের মাঝেও পাওয়ায় যায় নানা কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- তিনিই প্রথম লালন ফকিরের গান নিয়ে বই লেখেন এবং গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকায় বাউল গান প্রকাশ করেছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিজয় বসন্ত (উপন্যাস ১৮৬৯), পদ্যপুণ্ডরীক (১৮৬২), দ্বাদশ শিশুর বিবরণ, চারুচরিত্র (১৮৬৩), কবিতাকৌমুদী (১৮৬৬), বিজয়া (১৮৬৯), কবিকল্প (১৮৭০), অক্রুরসংবাদ (গীতাভিনয় ১৮৭৩), সাবিত্রী (গীতাভিনয় ১৮৭৪), চিত্তচপলা (১৮৭৬), একলব্যের অধ্যবসায়, ভাবোচ্ছ¡াস (নাটক), কাঙাল ফিকিরচাঁদ ফকিরের গীতাবলী (১৮৮৭ ও ১৮৯৩), ব্রহ্মাবেদ ( ধর্ম ও সাধনতত্ত্ব প্রথম থেকে ৬ষ্ঠ খণ্ড), কৃষ্ণকালী-লীলা (১৮৯২), অধ্যাত্ম-আগমনী (সঙ্গীত ১৮৯৫), আগমনী (ধর্মীয় সঙ্গীত), পরমার্থ-গাথা (ধর্মীয় সঙ্গীত), মাতৃ-মহিমা (সাধনতত্ত্বের ইতিবৃত্ত ১৮৯৭), কাঙাল ফিকিরচাঁদ ফকিরের বাউলসঙ্গীত, কংসবধ আত্মচরিত এবং হরিনাথ গ্রন্থাবলি।

    Advertisement for African All Media List
    কাঙাল হরিনাথ কাঙাল হরিনাথ কে? বাংলাদেশের সংবাদপত্রের জনক কাঙাল হরিনাথ
    Follow on Google News Follow on Facebook
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link
    আগের কন্টেন্ট কুমিল্লার জনৈক ব্যক্তির হাতে প্রথম তৈরি হয় যশোরের সাদেক গোল্লা
    পরের কন্টেন্ট ঘুরে আসুন দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি থেকে

    এ সম্পর্কিত আরও কন্টেন্ট »

    বিবিধ

    ২০২৫ সালের সেরা আবিষ্কারগুলো কী এবং কয়টি?

    বিবিধ

    যেমন ছিলো স্টোন এইজের খাবার

    বিবিধ

    শকুনের বাসায় ৬৭৫ বছরের বিস্ময়

    বিবিধ

    অ্যাসাইলাম আবেদন : ১০-১২ বছর পরও ডাক পাচ্ছেন না কেন?

    বিবিধ

    পানির নিচের পৃথিবী?

    বিবিধ

    এই প্রাণীগুলোকে পুষতে গেলেই মিলবে সাজা

    মন্তব্য যুক্ত করুন
    মন্তব্য করতে সবকিছু সঠিকভাবে পূরণ করুন! উত্তরটি বাতিল করুন

    • মজার খবর
    • সর্বাধিক পঠিত
    • আলোচিত খবর
    October 25, 2025

    চুমু খেলে কমবে মেদ-ওজন!

    September 22, 2025

    বিমানের ভেতরে ইঁদুর, ফ্লাইট উড্ডয়নে বিলম্ব

    September 17, 2025

    মানুষ কেন বহু জনের প্রতি আকষর্ণ বোধ করে

    September 2, 2025

    ব্রিটেনের অবিবাহিত পুরুষরা ৪ মাসে একবার বিছানার চাদর পাল্টান

    August 31, 2025

    জাপানি চায়ে বিশ্ব মাতোয়ারা

    August 26, 2025

    বিড়াল দত্তকে মিলবে ফ্ল্যাট ও টাকা

    August 18, 2025

    নেদারল্যান্ডসের অভিবাসন জাদুঘর

    August 9, 2025

    স্বর্ণের দোকানের ধুলোবালি বিক্রি করে আয় লাখ টাকা!

    August 9, 2025

    গরমেও গলবে না আইসক্রিম!

    August 8, 2025

    প্রেম নিয়ে মনোবিজ্ঞানের অবাক করা তথ্য!

    April 20, 2025

    সহজে ভিসা পাওয়া যায় এমন ইউরোপীয় দেশসমূহ

    April 27, 2025

    আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সহজ উপায়

    April 28, 2016

    মোবাইল অপারেটরদের বকেয়া ২ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা

    February 23, 2019

    বাংলা উইকিপিডিয়া সমৃদ্ধ করার আহ্বান

    March 9, 2017

    ব্রণের হাত থেকে বাঁচতে যা করবেন

    February 26, 2017

    জেনে নিন কাপড় থেকে দাগ তোলার সহজ উপায়

    June 30, 2019

    চীনের কাছে হেরে গেল যুক্তরাষ্ট্র, হুয়াওয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

    April 8, 2019

    একটি মারাত্মক ভূল কাজ !! এক কম্বলের নিচে দুই ভাই, দুই বোন অথবা দুই বন্ধু ঘুমানো !!

    May 5, 2016

    গরমে রঙিন আরামের পোশাক

    February 9, 2013

    আসছে ফেসবুক ফোন

    October 31, 2025

    ওমরাহ ভিসা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত, আসছে বড় পরিবর্তন

    October 30, 2025

    জার্মানির ভিসা প্রত্যাশীদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা

    October 30, 2025

    মাল্টায় গোল্ডেন ভিসার সুযোগ

    October 27, 2025

    এইচ-১বি ভিসা স্পন্সরশিপ বন্ধ করল আমেরিকার ৪ বড় কোম্পানি

    October 26, 2025

    গ্রিন কার্ড প্রত্যাশী ব্যবসায়ীদের জন্য দারুণ সংবাদ দিল আমেরিকা

    October 23, 2025

    এক প্রশ্নেই ভিসা বাতিল শিক্ষার্থীর, এফ-১ ভিসা নিয়ে নতুন বিতর্ক

    October 19, 2025

    ভিসা বাতিল হতে পারে ৯টি সাধারণ ভুল

    October 18, 2025

    ভিসা সংকটে বাংলাদেশিরা

    October 8, 2025

    ‘ভারতীয়দের জন্য ভিসা নীতি শিথিল হবে না’

    September 24, 2025

    আরব আমিরাতের ভিসা নিয়ে বড় সুখবর

    সর্বশেষ...
    November 4, 2025

    ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের মৃত্যু

    November 1, 2025

    ‘আমি তো সিরিয়াল করতে আসিনি’

    November 1, 2025

    স্মার্টফোনের ধারণা বদলে দিতে পারে টেসলা পাই ফোন

    November 1, 2025

    স্কলারশিপ নিয়ে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ

    জনপ্রিয় টপিকসমূহ
    kvarkeno56 NEW অর্থনীতি খেলা চাকরির খবর জীবনধারা টিপ্স-ট্রিক্স ধর্ম প্রবাসকথা প্রযুক্তি বাংলাদেশ বিদেশে উচ্চশিক্ষা বিনোদন বিবিধ বিশ্বজুড়ে ভিসাতথ্য মজার খবর মতামত রূপচর্চা রেসিপি সাহিত্য স্বাস্থ্য
    দৈনিক আর্কাইভ
    November 2025
    S S M T W T F
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    2930  
    « Oct    
    Copyright © 2011-2025 BartaBangla. Powered by DigBazar.
    • Home
    • About Us
    • Contact us
    • Our Team
    • Impressum
    • Sitemap
    • Download Apps

    কোনও কিছু অনুসন্ধান করার জন্য উপরে কিছু লিখে এন্টার চাপুন...

    আপনার ব্রাউজারে অ্যাড-ব্লকার সক্রিয়!
    আপনার ব্রাউজারে অ্যাড-ব্লকার সক্রিয়!
    আমাদের ওয়েবসাইটটি বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তাই অনুগ্রহ করে আপনার অ্যাড-ব্লকার নিষ্ক্রিয় করে আমাদেরকে সহযোগিতা করুন...