আমিনুল ইসলাম সুজন :: শান্তিতে নোবেল পেয়ে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিঃসন্দেহে বিশ্ব-অঙ্গনে বাংলাদেশের পরিচিতির নতুন মাত্রা আরোপ করেছেন। কিন্তু আসলে তিনি কতটা দেশের জন্য করেছেন সে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানাবিধ কথাবার্তা চালু আছে। আছে অনেক প্রশ্নও। আমারও কিছু প্রশ্ন আছে। সেগুলোই মূলত এই ছোট লেখার প্রধান উপজীব্য।
১. ড. ইউনুস বা গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে আমার মধ্যে প্রশ্ন আছে। নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে নারীকে ঋণ দেয়া হয়। কিন্তু এ ঋণের সুবিধাভোগী নারী নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষ। গ্রামীণ পুরুষরা তাদের স্ত্রীকে ব্যবহার (ব্যবহারই সঠিক শব্দ) করে ঋণ নেয়।
২. বগুড়ায় দরিদ্র মানুষেরা দই বানাত। সে দই বিক্রি করত। ড. ইউনুস গরীবের সে দই তুলে দিলে পৃথিবীর বড় খাদ্য ব্যবসায়ী ডানোন এর হাতে।
৩. গ্রামীণ ফোন রেল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে। ড. ইউনুস তার ব্যক্তিগত ইমেজ কাজে লাগিয়ে শেখ হাসিনার এর আগের মেয়াদের সময় রেল নেটওয়ার্ক গ্রামীনের পক্ষে নেন। এতে রেল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ গ্রামীণ ফোন নামমাত্র মূল্যে রেলের নেটওয়ার্ক কজ্জা করে। অথচ ভঙ্গুর ও বিপর্যস্ত রেল নিজস্ব নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নিজেরাই একটা মোবাইল কোম্পানি খুব সহজেই চালু করতে পারত। যা তাদের জন্য লাভজনক হতো।
৪. ড. ইউনুস (মূলত তার প্রতিষ্ঠান) এরশাদের সামরিক সরকারের সময়ে দেশের অনেক অঞ্চলে পুকুর লিজ নেন নামমাত্র টাকায়। যে পুকুরে সাধারণ মানুষের ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
…ড. ইউনুস এর এমন আরও অনেক বিষয় আছে, যা সমর্থন করি না। আমি এও মনে করি না, শান্তি পুরস্কার পাবার মত বিষয় ”ক্ষুদ্রঋণ”।…তবু তাকে নিয়ে সরকারের কার্যকলাপ সমর্থনযোগ্য নয়। এটা ব্যক্তিগত আক্রোশের পর্যায়ে চলে গেছে। সরকার তার খুৎ ধরায় এত সময়, শ্রম, মেধা খচর করছে, তা অকল্পনীয়। ড. ইউনুস এর কর ফাঁকি বা অন্যান্য দোষ এখন যেগুলো বের হচ্ছে (সরকারের দৃষ্টিতে), সেজন্য যারা তাকে ছাড় দিয়েছে, তাদের শাস্তি কি দেবে আওয়ামীলীগ?
ইউরোপ, আমেরিকায় যাবার সুবাদে দেখেছি, সেখানকার শিক্ষিত মানুষেরা ড. ইউনুস সম্পর্কে জানতে চায়। যদিও তাদেরকে জানানোর মত আমি কোন তথ্যই দিতে পারি না। তবু উপলব্ধি করতে পারি, ড. ইউনুস এর বিশাল একটা ফলোয়ার আছে সারা বিশ্বজুড়ে, যে অবস্থান বাংলাদেশের আর কেউ অর্জন করতে পারেনি।
লেখক : উন্নয়নকর্মী
