
মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন-ইউইসি) জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে মিয়ামারের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ পিথু লুত্তাও-এর ৫৬টি, নিম্নকক্ষ অ্যামিওথা লুত্তাও-এর ৯টি এবং প্রাদেশিক আইনসভা স্টেট লুত্তাও-এর ৫৬টি— মোট ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে না।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, “এই নির্বাচনী এলাকাগুলো বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সাধারণ নির্বাচনে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য উপযুক্ত নয় বলে মনে করা হচ্ছে। এ কারণেই নেওয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।”
ইউইসি’র এই ঘোষণার পর এক প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছে, মিয়ানমারের পার্লামেন্টের উচ্চ ও নিম্নকক্ষ এবং প্রাদেশিক আইনসভাগুলোর মোট আসনসংখ্যার হিসেবে বলা যায়, ২৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রতি ৭টি আসনের মধ্যে একটিতে হবে না ভোটগ্রহণ। শতকরা হিসেবে প্রায় ১৫ শতাংশ আসনে ভোটগ্রহণ হবে না।
এএফপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যে ১২১টি আসনে ভোট না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা— সব আসনই জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী শাসিত বিভিন্ন এলাকার।
উল্লখ্য, মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার দেশটির জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। জান্তা ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার নেতৃত্বাধীন রাজনৈতক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির হাজার হাজার মন্ত্রী-এমপি-নেতা-কর্মীদের। এখনও কারাগারেই আছেন তারা।
মিয়ানমারের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অভ্যুত্থানের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।
কিন্তু অভ্যুত্থানের ৬ মাসের মাথায় সক্রিয় হয়ে ওঠে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। মাধ্যমে সামরিক বাহিনীকে হটাতে দেশের বিভিন্ন গ্রাম-শহর-প্রদেশে শুরু হয় সংঘাত। বর্তমানে মিয়ানমারের মোট ভূখণ্ডের ৩৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, এএফপি

