শরীফ উদ্দিন শান্ত »

বাংলাদেশের নদীবিধৌত বেশিরভাগ এলাকার পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয় নৌকা। দূরে এবং কাছের পথে সহজে পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে সবধরনের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বহুকাল ধরেই ব্যবহার হয়ে আসছে নৌকার।

তবে দিন দিন নৌপথ এবং জলাশয় কমে আসায় নৌকার ব্যবহার কমে আসছে অনেকটাই। অবশ্য বাংলাদেশের কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও বসছে নৌকার হাট ও খেয়াঘাট। কুমিল্লার মুরাদনগরের ইলিয়টগঞ্জে এখনও বসে নৌকার হাট।

জলপথ কমে আসায় দিন দিন কমে আসছে নৌকার ব্যবহার। আগের মতো খেয়াঘাট থেকে প্রতিদিন ছেড়ে যায় না হাজার হাজার নৌকা। শুধুমাত্র কৃষিকাজ, মাছ ধরার জন্যই ব্যবহার হচ্ছে প্রাচীন এই পরিবহনটির । তবে এখনও যেসব অঞ্চলে জলাভূমি এবং রাস্তা-রাস্তাঘাটে অনুন্নত এলাকাগুলোতে বর্ষাকালে ব্যবহার হচ্ছে কম সংখ্যায় নৌকা। যাত্রী ও মাঝিরা জানালেন, যাত্রী কমে যাওয়ার কারনেই নৌকার ব্যবহার কমছে দিন দিন।

কুমিল্লার মুরাদনগরের ইলিয়টগঞ্জে এখনও বসে নৌকার হাট। বড়, মাঝারি এবং ছোট সব ধরনের নৌকাই পাওয়া যায় এখানে। আশেপাশের অন্যান্য উপজেলা থেকে ক্রেতারা আসে এখান থেকে নৌকা কিনতে। নৌকা ক্রেতা-বিক্রেতারা জানালেন, আশেপাশের এলাকাগুলোতে নৌকার হাট বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় এই এলাকার একমাত্র এই বাজার থেকেই নৌকা সংগ্রহ করছে ক্রেতারা।

স্থানীয় প্রবীনরা বলছেন, নদীর গতিপথ হ্রাস, খাল-বিল দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মানের কারনেই কমে গেছে নৌকার ব্যবহার। এছাড়া পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে বর্ষায় প্লাবন না হওয়ায় জলাশয় কমে নৌকার কদর কমে গেছে অনেক। তবে জলাঞ্চলগুলোর সঠিক সংরক্ষণের মাধ্যমে নৌকা ও নৌপথ টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

‘কোন মেস্তরি নাও বানালো-কেমন দেখা যায়।।
ঝিলমিল ঝিলমিল করে দেখো মযুরপঙ্খী নাও—’

শাহ আব্দুল করিমের এই গানের মতো আবারও নৌকার চলাচলে সরব হবে কুমিল্লার নৌপথগুলো – এমনটাই প্রত্যাশা করেন মাঝি-মাল্লারা।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »