ঘরে আরামদায়ক বিছানা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, ফ্রিজ, সোফা, বিশাল এলসিডি টিভি, আয়েশি শৌচাগার, রান্নাঘর, গ্রন্থাগার—সবই আছে। যেন তিন কামরার বিলাসবহুল স্যুইট। এটি আসলে মাদকদ্রব্য পাচারকারী এক দাগি আসামির কারাকক্ষ। আট বছরের কারাদণ্ড পেয়ে যিনি এই বিলাসী জীবন যাপন করছেন, তিনি ব্রাজিলের মাদকদ্রব্য চোরাচালানের সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যক্তি জারভিস চিমেনেস পাভাও। তাঁকে দক্ষিণ আমেরিকার দুর্ধর্ষ মাদক পাচারকারীদের একজন মনে করা হয়।
অর্থ পাচারের মামলায় আট বছরের সাজা হয় পাভাওয়ের। এরপর থেকে তিনি প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিয়নের তাকুম্বু কারাগারের ওই কক্ষে থাকছেন।
সম্প্রতি ওই কারাগার থেকে শক্তিশালী এক বোমা উদ্ধারের পর প্যারাগুয়ে কর্তৃপক্ষ সেখানে অভিযান চালায়। তখনই বেরিয়ে আসে এ তথ্য। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্যারাগুয়ের কারাব্যবস্থা। জানা গেছে, প্লাস্টিক বিস্ফোরক ব্যবহার করে কারাগারের দেয়াল ছিদ্র করে পালানোর মতলব ছিল পাভাওয়ের। আগামী বছর পাভাওয়ের মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু এরপর মাদক পাচারের মামলায় ব্রাজিলে গিয়ে ফের তাঁকে জেল খাটতে হবে।
পাভাওয়ের আইনজীবী লরা আকাসুসো সাংবাদিকদের বলেন, উঁচু মহল থেকে তাঁর মক্কেলকে এসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিচার-বিষয়ক হোমরাচোমরা ও কারা-বিষয়ক হর্তাকর্তারা পাভাওয়ের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন।
যখনই এ কেলেঙ্কারি ঘটনা প্রকাশ হয়ে যায়, তখনই বিচার-বিষয়ক মন্ত্রী কারলা বেসিগালুপোকে বরখাস্ত করা হয়। তাঁর স্থলে আসা নতুন মন্ত্রী ইভার মার্টিনেজ এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পাভাওয়ের কারাকক্ষটি গুঁড়িয়ে দিতে যাচ্ছি। একই সঙ্গে একজন বন্দীকে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য কারা পরিচালকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাভাওকে এখন পুলিশের বিশেষ ইউনিটের অধীনে একটি সেলে রাখা হবে। এই তাকুম্বু কারাগারে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বন্দী রয়েছে, যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ।