মোবাইল ফোন বর্তমানে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। এই যন্ত্রটি ছাড়া এখনকার যুগে যেনো বেঁচে থাকাই দায়। শুধু যোগাযোগ নয়, এখন সব কিছুই হচ্ছে মোবাইল ফোনে। টাকা-পয়সা লেনদেনসহ বাসার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল দিতে পারছেন ঘরে বসেই। মোবাইল ফোনে কাজের শেষ নেই। ছোট থেকে বৃদ্ধরা সবাই ব্যবহার করছেন মোবাইল ফোন। ছোটদের পড়াশোনা শেখানোর ভারও যেন এই ফোনের কাঁধেই। ফোনেই বিভিন্ন ভিডিও দেখে শিশুরা পড়া শিখছে। বড়রা খবর দেখা, সিনেমা, নাটক দেখা কিংবা কারো সঙ্গে যোগাযোগ সব কিছুর জন্যই আছে মোবাইল ফোন।
পৃথিবীর সব দেশে ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা সমান নয়। কোনো কোনো ফোন ব্যবহারের হার বেশি। আবার কোনো দেশে কম। সম্প্রতি কোন দেশের মানুষ মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপে কতক্ষণ সময় কাটায় সেই নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল ইওয়াই এবং এফ আইসিসিআই নামের দুটি প্রতিষ্ঠান।
তাদের যৌথ প্রতিবেদনে জানা গেছে- বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ফোন ব্যবহার করেন ইন্দোনেশিয়ার মানুষ। তারা সারাদিনে বিভিন্ন অ্যাপে গড়ে ৬.১ ঘণ্টা সময় কাটান। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড। সে দেশের মানুষ বিভিন্ন অ্যাপের পেছনে সারাদিনে গড়ে ব্যয় করেন ৫.৬ ঘণ্টা।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে মেসির দেশ আর্জেন্টিনা। এখানকার মানুষ সারাদিনে ৫.৩ ঘণ্টা সময় কাটান মোবাইল অ্যাপে। সৌদি আরবের নাগরিকরাও মোবাইলের পেছনে সারাদিনে ব্যয় করেন ৫.৩ ঘণ্টা সময়। তারা রয়েছেন এই তালিকার চতুর্থ স্থানে। পঞ্চম স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। এই দেশের মানুষ দিনের মধ্যে প্রায় ৫ ঘণ্টা মোবাইল ঘেঁটেই কাটিয়ে দেন। তালিকার ষষ্ঠ স্থানে জায়গা পেয়েছে ভারত। সমীক্ষা অনুযায়ী, দিনের ৪.৮ ঘণ্টা মোবাইলে কাটান এই দেশের নাগরিকরা।
ফোন ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারে না আজকের প্রজন্ম। তবে এই নেশায় কাবু শুধু ছোটরা নয়, বড়রাও। আট থেকে আশি সকলের হাতে একটা জিনিস খুবই কমন, সেটি হল স্মার্টফোন। বিশ্বে এমন কিছু দেশ আছে, যে দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি স্মার্টফোনে আসক্ত। সম্প্রতি ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় এমন কিছু দেশের নাম উঠে এসেছে। সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে- স্মার্টফোনে সব থেকে বেশি আসক্তির তালিকায় ২৪টি দেশের জনগনের কথা বলা হয়েছে। দেশগুলো হলো- চীন, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, কানাডা, তুরস্ক, ইজিপ্ট, নেপাল, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ইজরায়েল, সার্বিয়া, জাপান, ব্রিটেন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রোমানিয়া, নাইজেরিয়া, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানি। এর মধ্যে প্রথম দশ দেশে স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয় সবথেকে বেশি। উক্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনে মোবাইল ডিভাইস ও তার ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবার থেকে বেশি। তা হওয়ার অন্যতম কারণ তাদের জনসংখ্যা এবং সেখানকার ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের বাজার।
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সৌদি আরব। বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশগুলোর মধ্যে একটি সৌদি আরব। এখানেও স্মার্টফোন ব্যবহারের সংখ্যা বাকি দেশের থেকে অনেক বেশি। প্রথম তিনটি দেশই এশিয়ার হওয়ায় স্পষ্টতই বোঝা যায়, ইউরোপ এবং আমেরিকার থেকে বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার হচ্ছে এই মহাদেশে।
আইফোন ব্যবহারে জাপান সবচেয়ে এগিয়ে। আইফোনের সবচেয়ে বড় বাজার তাদের। এই দেশের ৫৯ শতাংশ নাগরিক আইফোন ব্যবহার করেন। অর্থাৎ প্রতি ৫ জনের মধ্যে ৩ জনের হাতে আইফোন দেখা যায়। জাপানের ৯ শতাংশ নাগরিক স্যামসংয়ের ফোন ব্যবহার করেন। বাকি ৩২ শতাংশ মানুষ কেনেন অন্যান্য ব্র্যান্ডের ফোন।
এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া এবং ব্রাজিলের ১৮ শতাংশ মানুষ আইফোন ব্যবহার করেন। ইতালিতে আইফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০ শতাংশ। একইভাবে মেক্সিকো এবং রাশিয়ার যথাক্রমে ২০ শতাংশ এবং ১২ শতাংশ, ব্রিটেনের ৪৮ শতাংশ, জার্মানির ৩৪ শতাংশ এবং ফ্রান্সের ৩৫ শতাংশ লোক আইফোন ব্যবহার করেন।
দ্বিতীয় এবং তৃতীয়: সবচেয়ে বেশি আইফোন ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কানাডা। এখানকার ৫৬ শতাংশ মানুষের পছন্দের ব্র্যান্ড আইফোন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই দেশের ৫৩ শতাংশ মানুষ আইফোনের সাথে যুক্ত আছেন।