মুসা আহমেদ বখ্তপুরী, কাতার :: দেশে-বিদেশে কর্মরত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে বিমানে প্রতিবছর লোকসান দেবার বিশ্ব রেকর্ড এখনো কেউ ভাঙ্গতে পারেনি। উল্টো দুর্নীতির পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনের পর দিন। এ ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে কাতারে। বিমানের এক মহিলা কর্মকর্তার অভিনব কায়দার দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর সংবাদ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ২০১০ জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে দোহায় বিমানের ষ্টেশন ম্যানেজারের দায়িত্ব নিয়ে যোগ দেন মিসেস সাকি রেজওয়ানা। এযাবৎ তিনিই সম্ভবত কাতারে বিমানের একমাত্র মহিলা ষ্টেশন ম্যানেজার। এর আগে দোহা বিমান বন্দরে বাংলাদেশ বিমানের আর কোন মহিলা ষ্টেশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। দীর্ঘদিন পর একজন মহিলা কর্মকর্তা পেয়ে কাতার প্রবাসীরা ভাল কিছু আশা করেছিলেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি কিছুদিনের মধ্যেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতি কেজি ৮০ রিয়ালের বদলে ৪০ রিয়াল নিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেবার মিশন শুরু করেন। তার এই অবৈধ সুযোগ নিয়ে কাতারপ্রবাসী যাত্রীদের মধ্যে অল্প ওজন দেখিয়ে মালামাল পাঠাবার প্রবণতা বেড়ে যায় এবং সমগ্র কাতারে তার কিছু দালালেরও সৃষ্টি হয়।
সূত্র জানায়, কাতারে অবস্থানরত বরিশালের এক দালালের মাধ্যমে প্রতিমাসে কম করে হলেও দু’বার দোহা থেকে ঢাকা, ঢাকা থেকে দোহা নেশাজাতীয় যৌনদ্রব্য ইয়াবাহসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ মালামাল আনা-নেয়া করতেন তিনি। এসব অবৈধ ট্যাবলেট প্রবাসে দেশীয় তরুণদের পাশাপাশি প্রতিবেশী এজেন্টের কাছে মোটা অংকের রিয়ালের বিনিময়ে বিক্রি করে তিনি হঠাৎ করেই বহু টাকা মালিক বনে যান ওই কর্মকর্তা। এটি এরই মধ্যে জাতীয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ।
অবশ্য সম্প্রতি এক দালালের মাধ্যমে ৪৫০ কেজি মালামাল দোহা থেকে ঢাকা শাহজালাল বিমান বন্দরে এসে পৌঁছার পর কাস্টমে ধরা পড়লে তার আসল মুখোশ উম্মোচিত হয়। সাথে সাথে বিমান কর্তৃপক্ষ মিসেস সাকি রেজওয়ানাকে দোহা থেকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় ফেরত নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে কাতারে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশি এ প্রতিবেদককে জানান, মিসেস সাকি রেজওয়ানা দোহায় যোগ দেবার পর যাত্রীদের নিকট থেকে তার নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ শুনে আসছি।
তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিনে গেলে বিষয়টির সত্যতা মেলে। অনেক যাত্রীই সাকি রেজওয়ানার সামনেই ভোগান্তির কথা জানান।