আজকাল নতুন মোবাইল কেনার সময় পুরনো মোবাইল এক্সচেঞ্জ করে নেওয়ার চল খুব জনপ্রিয়। এতে একদিকে নতুন ফোন কেনার খরচ কিছুটা কমে, অন্যদিকে পুরনো ফোনও অব্যবহৃত পড়ে থাকে না।

তবে অনেক সময় ভুলবশত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ছবি বা ব্যক্তিগত ডেটা পুরনো মোবাইলেই থেকে যায়, যা পরবর্তীতে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই এক্সচেঞ্জের আগে কিছু জিনিস অবশ্যই ভালভাবে চেক করে নেয়া জরুরি।
কোন কোন জিনিস মাথায় রাখবেন?
১. ডেটা ব্যাকআপ নিন – প্রথম কাজ হল পুরনো মোবাইলের সব ডেটা ব্যাকআপ নেওয়া। গুগল ড্রাইভ, আইক্লাউড বা পেনড্রাইভ/ল্যাপটপে ছবি, ভিডিও, কন্টাক্টস, নথি, অডিও রেকর্ডিং ইত্যাদি সেভ করে নিন। এতে নতুন ফোনে সহজেই সব তথ্য ট্রান্সফার করতে পারবেন।
২. SIM ও মেমোরি কার্ড বের করুন – অনেক সময় তাড়াহুড়োতে মানুষ সিম কার্ড বা মেমোরি কার্ড ফোনেই রেখে দেন। এটি এক্সচেঞ্জ করা মোবাইল অন্যের হাতে গেলে ব্যক্তিগত ডেটা অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকে। তাই ফোন দেওয়ার আগে অবশ্যই সিম ও মেমোরি কার্ড বের করে নিন।
৩. সকল অ্যাকাউন্ট থেকে লগ আউট করুন – ফোনে থাকা জিমেইল, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ব্যাংকিং অ্যাপ বা শপিং অ্যাপ থেকে লগ আউট করুন। না হলে পরবর্তীতে অন্য কেউ আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করতে পারে। গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে ফোন Remove device করে নেওয়া সবচেয়ে জরুরি।
৪. ফ্যাক্টরি রিসেট করুন – সব তথ্য মুছে দেওয়ার জন্য ফ্যাক্টরি রিসেট সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। তবে রিসেট করার আগে ব্যাকআপ সম্পূর্ণ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হয়ে নিন। রিসেট করলে ফোন একদম নতুনের মতো হয়ে যাবে এবং আপনার ব্যক্তিগত ডেটা অন্য কারও হাতে পড়বে না।
৫. IMEI নম্বর ও ফোনের অবস্থা যাচাই করুন – এক্সচেঞ্জে সঠিক দাম পাওয়ার জন্য ফোনের IMEI নম্বর লিখে রাখুন। এটি ভবিষ্যতে কোনো সমস্যায় কাজে আসতে পারে। এছাড়া ফোনের ডিসপ্লে, চার্জার, হেডফোন, বক্স ইত্যাদি ঠিক আছে কি না দেখে নিন, কারণ এগুলো থাকলে এক্সচেঞ্জ ভ্যালু বেশি পাওয়া যায়।
৬. ব্যাংকিং ও পেমেন্ট অ্যাপ মুছে দিন – গুগল পে, ফোনপে, পেটিএম, ব্যাংকিং অ্যাপ ইত্যাদি মোবাইল থেকে পুরোপুরি আনইনস্টল করে দিন। অনেক সময় ক্যাশড ডেটা বা সেভ করা পাসওয়ার্ড ফোন রিসেট না করলে থেকে যেতে পারে, যা আর্থিক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
৭. অন্য কারও কাছে ফোন দিলে একবার চেক করুন – এক্সচেঞ্জ দেওয়ার আগে শেষবার ফোনটি চালু করে দেখে নিন সবকিছু ঠিকমতো মুছে দেওয়া হয়েছে কি না। হোয়াটসঅ্যাপ, গ্যালারি, ব্রাউজার হিস্ট্রি—সব খালি আছে কি না তা যাচাই করা জরুরি।
৮. সঠিক ডিলার বা অফিসিয়াল এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করুন – ফোন এক্সচেঞ্জ অবশ্যই নির্ভরযোগ্য দোকান, ব্র্যান্ডের শোরুম বা অফিসিয়াল অনলাইন প্ল্যাটফর্মে করা উচিত। সন্দেহজনক জায়গায় দিলে অনেক সময় দাম কম পাওয়া যায় বা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
পুরনো মোবাইল এক্সচেঞ্জ করার আগে ডেটা ব্যাকআপ, অ্যাকাউন্ট লগ আউট, সিম ও মেমোরি কার্ড বের করা, ফ্যাক্টরি রিসেট—এই কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে। এতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে।