ঘরে, বাইরে সব জায়গাতেই এখন সমান দরকার পাওয়ার ব্যাংক ডিভাইস। যুগ এখন প্রযুক্তির, ডিভাইস চার্জড রাখতে গেলে পাওয়ার ব্যাংক তো কাজে লাগবেই। তবে এটি দরকারি ডিভাইস হলেও বেশির ভাগ বিমানবন্দরের ইন-লাইন ব্যাগেজ ব্যবস্থায় পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যাওয়া যায় না। বিশেষ করে বিমানযাত্রায় তার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা বসল কেন? বিমান মোবাইলে চার্জই বা হবে কীভাবে?

আসলে, পাওয়ার ব্যাংক বিশেষ করে তাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যারা বিশ্বজুড়ে বিমান সংস্থা এবং উড়ান পরিচালনা করে। এই বছরের শুরুতেই দক্ষিণ কোরিয়ায় এয়ার বুসানে একটি বড় বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা ফের সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এতটাই যে ২০২৫ সালে বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা ফ্লাইটে (কেবিনে এবং লাগেজ উভয় ক্ষেত্রেই) পাওয়ার ব্যাংকের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে বা বিমানচালকদের মাঝ আকাশে নিজেদের ডিভাইস চার্জ করার জন্য পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করায় নির্দেশিকা জারি করেছে।
দোষও ঠিক দেওয়া যায় না! কেননা, বেশিরভাগ মানুষই যখন তাদের ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায় অথবা তা বিপজ্জনক রেড লেভেলে পৌঁছায় তখন পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করেন।
এত দিন পর্যন্ত এই নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলেও সাম্প্রতিক একাধিক দুর্ঘটনা এয়ারলাইন্সগুলোকে পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারের বিষয়টি নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।
এই ডিভাইসগুলোতে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থাকে যা অন্য ডিভাইস চার্জ করতে সাহায্য তো করে, তবে গরম হয়ে গেলে তা থেকে বিস্ফোরণও হতে পারে। বিমানযাত্রায় মাঝ আকাশে স্বাভাবিক ভাবেই তা কাম্য নয়।
অভ্যন্তরীণ বিমান সংস্থায় ভ্রমণকারীদের পাওয়ার ব্যাংক বহন করার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি বটে, তবে বিদেশ ভ্রমণে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ভাবতেই হবে।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মতো কিছু সংস্থা একটি নির্দিষ্ট ক্ষমতার পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারের অনুমতি দিলেও অনেকেই তা নিষিদ্ধ করেছে, অতএব, টিকিট কাটার আগেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইট দেখে নেওয়া উচিত হবে।
যাত্রীদের তাহলে এবার থেকে কী করা উচিত? থাই এয়ারওয়েজ এখনও কেবিনে পাওয়ার ব্যাংক বহন করার অনুমতি দিচ্ছে, কিন্তু ফ্লাইটে এর সাহায্যে ডিভাইস চার্জ করতে দিচ্ছে না। আবার, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই এয়ার বুসানে যাত্রী কেবল পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে নিতে পারবেন, তবে তা ওভারহেড স্টোরেজ বগিতে রাখা যাবে না, ফ্লাইটে এটা সর্বদা নিজের পাশে রাখতে হবে, ব্যবহার কিন্তু করা যাবে না।
অতএব, এটা স্পষ্ট যে অনেক বিমান সংস্থাই পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে নতুন নিয়ম জারি করছে, তাই বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে অবশ্যই ওয়েবসাইট থেকে নিয়মগুলো জেনে নিতে হবে।
পাওয়ার ব্যাংক সম্পর্কিত দুর্ঘটনা এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হল আসল ব্র্যান্ডের পাওয়ার ব্যাংক কেনা এবং এর ক্ষমতা (mAh) ২০,০০০ ইউনিটের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা, যা বেশিরভাগ ফ্লাইটে অনুমোদিত। তবে, উড়ানের আগে ফোন, ট্যাবলেট এবং ঘড়ি সম্পূর্ণ চার্জ করে রাখা উচিত, যাতে মাঝ আকাশে পাওয়ার ব্যাংকের প্রয়োজনই না পড়ে।