রাহমান মনি, (টোকিও) জাপান :: জাপানে এ বছর বৈশাখী মেলা পালিত হবে ১৪ এপ্রিল রোববার। দিনটিকে ঘিরে প্রবাসীদের মাঝে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে। তার কারন, এবারের বৈশাখী মেলা বাংলাদেশেও একই দিনে উদযাপন করা হবে। ১ বৈশাখ বাংলাদেশে সরকারী ছুটি থাকলেও প্রবাসে কর্মদিবসে কাজকেই প্রাধান্য দিতে হয়। পরবর্তী রোববার সাধারণত মেলার আয়োজন করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন পর রোববার পহেলা বৈশাখ হওয়ায় এবারের আয়োজনের আমেজ অনেকটাই উৎসব মুখর। জাপানে বর্তমানে বিভিন্ন শহরে বৈশাখী মেলা হয়ে থাকলেও রাজধানী টোকিওতে অর্থাৎ টোকিও বৈশাখী মেলা জাপান প্রবাসীদের প্রাণের মেলা, প্রবাসীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। টোকিও বৈশাখী মেলা বাংলাদেশের ছায়ানট আয়োজিত রমনার বটমূলের আয়োজনের পরেই স্থান। অত্যন্ত গুছালো এবং স্বতঃস্ফুর্ততার এই মেলায় প্রায় ৭/৮ হাজার দর্শনার্থীর পদচারনায় মুখরিত, এই মেলার বিরাট অংশ জুড়ে থাকে জাপান সহ অন্যান্য দেশের অতিথিগণ। টোকিও বৈশাখী মেলার প্রধান আয়োজক সংগঠক জে.বি.এস বা জাপাান বাংলাদেশ সোসাইটির এবারের আয়োজন ১৪ তম। মেলা কমিটির প্রধান সমন্নয়ক ড. শেখ আলীমুজ্জামানের নেতৃত্বে একঝাঁক উদ্যোমী কর্মী বাহিনী মেলা আয়োজনের যাবতীয় কর্ম সম্পন্ন করেছেন ইতোমধ্যেই, বাকী শুধু মাহেন্দ্র দিন। বাংলাদেশের ঐতিহ্য, শিল্প, সংস্কৃতি, কৃষ্টি এবং একই সাথে বাংলাদেশী খাদ্য সংস্কৃতিকে জাপানসহ বিশ্বে পরিচিত করানো-ই টোকিও বৈশাখী মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রতি বৎসর অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এই মেলা সম্পন্ন করার হাত ধরেই এই মেলা প্রাঙ্গন অর্থাৎ ইকেবুকুরো নিশিগুচি কোয়েন- এ স্থায়ী ভাবে নির্মিত হয়েছে বাঙ্গালীর গর্ব শহীদ মিনার। দিন ব্যাপি এ মেলায় থাকছে বাংলাদেশের কুটির শিল্প, চামড়া শিল্প, পাট শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প, খাদ্য শিল্পের নানা রকম সমাহার। এবারই প্রথম বারের মতো মেলায় থাকছে আবাসন শিল্প। মেলায় স্পন্সর হিসেবে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশের আবাসন শিল্প বসুন্ধরা গ্রুপ। উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাংলাদেশ-জাপান এর বিভিন্ন বিনোদন মুলক আয়োজন, থাকছে স্থানীয় সংগঠনগুলির বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্মাননা প্রদান, থাকছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ এবং সবশেষে বাংলাদেশ থেকে একঝাঁক আমন্ত্রিত শিল্পীদের স্টেজ মাতানো আয়োজন। টোকিও বৈশাখী মেলা ২০১৩ বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত হয়ে আসবেন কোজআপ ওয়ান খ্যাত তারকা শশী, বাপ্পি, ইমাম। এছাড়ও আসছেন সেলিম ও পাপ্পু।
১৪ এপ্রিল রোববার বানিজ্যিক রাজধানী ওসাকা সিটির কেস্টল পার্কে বৈশাখী বর্ষবরণ, নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন এবং ফুকুওকা শহরের সেন্ট্রাল পার্কেও প্রবাসী বাংলাদেশীরা বৈশাখী মেলার আয়োজন করছেন জানান দিয়ে। এছাড়াও ছোট পরিসরে বিভিন্ন শহরে এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে অনেকটা ঘরোয়াভাবে সীমিত আকারে বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হবে। তবে সবগুলি আয়োজনে প্রবাসীরা স্থানীয় জাপানীসহ অন্যান্য দেশের বন্ধুদের সম্পৃক্ত করার সুযোগ হাত ছাড়া করে না, যেটা জাপান প্রবাসীদের বড় সাফল্য।
মন্তব্য যুক্ত করুন