সুন্দর করে যে কেউ নিজের আবাসস্থল সাজাতে চায়। শুধু মানুষ কেন, পশুপাখিরাও তাদের বাসা বা থাকার জায়গাটা গুছিয়ে রাখতে ভালোবাসে। মানুষের সমস্যাটি হলো বেশি সুন্দর করে সাজাতে গিয়ে কিছু ভুল করে ফেলা, যা রুচিশীলতার পরিচায়ক নয় তো বটেই, পাশাপাশি অসুবিধারও কারণ। জেনে নিন এমন কিছু ভুলের কথা।
জায়গা খালি থাকলেই তা ভরানোর চেষ্টা
যদি কোনো দেয়াল খালি থাকে অথবা কোনো টেবিল বা তাক খালি খালি লাগে, দুম করে যেন সেই শূন্যস্থান পূরণের জন্য কোনো ঘর সাজাবার সামগ্রী কিনে ফেলবেন না। এটা হলো এক ধরনের জঞ্জাল জমানো। আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না যে আপনার বাড়িটি একসময় হয়ে উঠুক আবর্জনাপূর্ণ। এই ভুলটি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে যদি ছবি অথবা টুকিটাকি সাজানোর জিনিসের পরিবর্তে আপনি শুধুমাত্র ঘর ভরানোর জন্য কিনে আনেন আসবাবপত্র। এই ধরনের অপরিকল্পিত কেনাকাটা গৃহসজ্জাকে খুব সহজেই নষ্ট করে দিতে পারে।
ঘরের সজ্জা না বদলানো
মনে করুন, আপনার কেনা আসবাবপত্রগুলো আপনার ভীষণ প্রিয়। কিন্তু তাই বলে কি সেগুলোকে চিরকালের জন্য অপরিবর্তিত ভাবে রেখে দেবেন ঘরের নির্দিষ্ট কোনো জায়গায়? আসবাব যদি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে না সাজানো হয়, তাহলে অল্প কিছুদিন পরেই সেগুলোর সুশৃঙ্খল পরিবেশে আপনি এতটাই অভ্যস্ত হয়ে যাবেন যে হয়তো আপনার অতি পছন্দের আসবাবের দিকে ফিরেও তাকাবেন না। তখন ঘর জুড়ে থাকবে শুধু একঘেয়েমি। তাই মাঝে মাঝেই পাল্টে ফেলুন আপনার বাড়ির অন্দরসজ্জা।
পত্রিকার ছবি দেখে ঘর সাজাতে চাওয়া
মনে করুন পত্রিকায় সাজানো ঘরের ছবি দেখে আপনি মুগ্ধ। কিন্তু যদি ছবির সঙ্গে মিলিয়ে ঘর সাজাতে চান তাহলেই বিপদ। ছবি আর ঘরের নকশাটা ভালো করে খুঁটিয়ে দেখুন। দেখবেন, ঘরগুলো যেন একেবারে ছকে আঁকা – দেয়ালের ঠিক যেখানে জানালা রয়েছে আর তার থেকে মাপা দূরত্বে দরজাটি। আপনি যে ঘরটিকে ওই ছবি অনুযায়ী সাজাবেন বলে ভেবেছিলেন, সেটির আয়তন ও আকার কি ছবির মতো? ঘর সাজানোর সময় এই পার্থক্যটি সব সময় মাথায় রাখতে হবে। যেমন ধরুন, আপনার পছন্দ হলো একটি অতি আধুনিক নকশা, কিন্তু আপনার বাড়িটি পুরোনো ধাঁচের, তাহলে ঘরকে আধুনিক করে সাজাবেন কী করে? হাল ফ্যাশনের নকশা অনুযায়ী সাজাতে গেলে সবকিছুই কেমন বেখাপ্পা এবং বেমানান মনে হবে। তাই ঘর সাজান বাড়ির কাঠামো অনুযায়ী।
পুরোনো এবং নতুনের সমন্বয় না করা
যদি আপনার বাড়িতে পুরোনো এবং আধুনিক দু ধরনের আসবাবই থাকে তাহলে পুরোনোগুলো বিক্রি করে শুধু আধুনিক অথবা আধুনিকের পরিবর্তে শুধু প্রাচীন আসবাব রেখে ঘর সাজাবার চেষ্টা করবেন না। এতে শুধু একটা গত্ বাঁধা ধারাই আসবে, নিজের সৃজনশীলতা প্রকাশ পাবে না। পুরোনো আসবাবগুলো ভালো জাতের এবং ভালো কাঠের হয় তাহলে সেগুলো বিক্রি করে না দিয়ে বরং আধুনিক আসবাবের সঙ্গে সমন্বয় করে রাখুন। এতে আপনার আভিজাত্যই ফুটে উঠবে।
এলোপাথাড়ি কেনাকাটা
নতুন বাড়িতে ওঠার পর প্রথমেই একটা পাগলামো ভাব থাকে সেটা সাজানো নিয়ে। কিন্তু এসময় যদি নিজের পছন্দ, রুচি এবং চাহিদার সমন্বয় না করা হয় তাহলেই সমস্যা! ‘কোনটা ছেড়ে কোনটা কিনব’ এ রকম দিশেহারা অবস্থায় প্রবণতা থাকে যা চোখে পড়ে তাই কিনে ফেলার। ক্রমে ক্রমে জমা হয় অনেক বেমানান ও অপ্রয়োজনীয় জিনিস। একবার ঘর সাজানো হয়ে গেলে আর খারাপ লাগবে না, এটা ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দেন অনেকেই। কিন্তু এই বেমানান জিনিসপত্র একবার সাজানো হয়ে গেলে অত সহজে আর বদলাতে পারবেন না। তাই সাবধান হোন প্রথমেই।