বার্তাবাংলা রিপোর্ট :: ভেনেজুয়েলার আরাগুয়া রাজ্যের ছোট্ট শহর এল কনসেহো। খুন, রাহাজানি, অপহরণ, ধর্ষণের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল শহরটি! কিন্তু গত ১০ বছরে অনেকটাই পাল্টে গেছে। আর পাল্টাবেই বা না কেন? সন্ত্রাসীরা যে সব খেলায় ঝুঁকছে।
১০ বছর আগে যেখানে প্রতিবছর লাখে অন্তত ১১৫ মানুষ সন্ত্রাসের শিকার হতো, এখন তা কমে ২৫ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। কারণ বড় বড় সন্ত্রাসীরা সব খেলছে রাগবি। আর এতেই কমেছে সন্ত্রাস, কমে গেছে অমৃত্যুর হার।
সবকিছুর কৃতিত্বের দাবিদার অবশ্য একজন মানুষ। তিনি হলেন আলবার্তো ফলমার। তার পূর্বপুরুষরা জার্মান। সে কারণে অন্যদের থেকে তার মধ্যে দৃঢ়তাও অনেক বেশি। তার প্রমাণও মিলে একটি ঘটনায়। একদিন তার খামারে ডাকাতি করতে এসে ধরা পড়ে ডাকাতরা। যথারীতি খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদেরকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু ফলমার পুলিশের হাতে-পায়ে ধরে ডাকাত হোসে গ্রেগরিয়ো আরিয়েতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের ছাড়িয়ে আনেন।
তবে নিশ্চিত কারাভোগের যন্ত্রণা থেকে বাঁচিয়েও আরিয়েতাকে ছেড়ে দেননি ফলমার। প্রথমে তাকে বললেন, তার খামারে কাজ করতে। আরিয়েতা তাতে রাজিও হন। কিছুদিন পর তার হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় রাগবি বল। তখন ফলমার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আরিয়েতাকে বলেন, ‘সব ছেড়ে রাগবি খেলা শুরু করো। তোমাকে দেখে অনেকেই খারাপ কাজ ছাড়ে দেবে। আর এতে এলাকায় ধীরে ধীরে শান্তিও ফিরবে। তোমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও উপকার হবে।’
‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী’ এমন প্রবাদকে মিথ্যা প্রমাণিত করে ফলমারের দেখা পথেই হেঁটেছেন ডাকাত সর্দার আরিয়েতা। ২০০৩ সালে তার নামানুসারেই ‘আলকাতরাজ রাগবি ক্লাব’ গঠন করেন ফলমার। বর্তমানে এ ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ২ হাজার। সদস্যদের বেশিরভাগই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জাড়িত ছিলেন। এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই এখন সারা ভেনেজুয়েলার মানুষ ফলমারকে চেনে। আরিয়েতাকেও সবাই শ্রদ্ধা করে। এখন তিনি আইটি স্পেশালিস্ট এবং রাগবি খেলোয়াড়। বিয়েও করেছেন। তার এখন তিন সন্তান। বড় দুই ছেলেও ‘আলকাতরাজ রাগবি ক্লাব’ এর সদস্য।