বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এক সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ এক তথ্য— বিশ্বের সবচেয়ে অলস জনগোষ্ঠীর দেশ হিসেবে শীর্ষস্থান দখল করেছে কুয়েত। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির প্রায় ৬৭ শতাংশ মানুষ নিয়মিত শরীরচর্চা করে না, যা তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
গবেষণা অনুসারে, কুয়েতের নাগরিকরা দৈনন্দিন কাজেও শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলেন। অনেক সময় রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার পর কাউন্টারে গিয়ে বিল দেওয়ার মতো সাধারণ কাজেও তাদের অনীহা দেখা যায়।
দেশটিতে গাড়ির মালিকানা অত্যন্ত সাধারণ একটি বিষয়। এমনকি ভিক্ষুকরাও ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন বলে জানা গেছে। তারা গাড়ি চালিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভিক্ষা করেন। এখানকার মূল্য ব্যবস্থার অদ্ভুত দিক হলো— এক বোতল পানির দাম অনেক সময় এক বোতল তেলের চেয়েও বেশি হতে পারে।
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও সামাজিক নিয়মনীতি
মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর তুলনায় কুয়েতের সংস্কৃতি কিছুটা ভিন্নরকম। দেশটির রাস্তায় যেমন দেখা যায় বোরকাপরা তরুণী, তেমনি পাশেই হেঁটে চলেন পশ্চিমা পোশাক পরা নারী। তবে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নীতিমালায় রয়েছে কড়াকড়ি। কোনো কুয়েতি নারী যদি বিদেশি পুরুষকে বিয়ে করেন, তবে তাদের সন্তান কুয়েতি নাগরিকত্ব পায় না।
কুয়েত বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান মুদ্রাব্যবস্থা পরিচালনাকারী দেশগুলোর একটি। ভৌগোলিকভাবে এটি সৌদি আরব ও ইরাকের মাঝখানে অবস্থিত। রাজধানী কুয়েত সিটি।
অভিবাসী নির্ভরতা ও ধর্মীয় জনসংখ্যা
দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ। এর মধ্যে মাত্র ১৪ লাখ স্থানীয়, বাকি ৩২ লাখই প্রবাসী। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর অভিবাসীরা এখানে কাজ করেন। ধর্মীয় দিক থেকে দেশটির প্রায় ৭৫ শতাংশ মুসলিম, ১৯ শতাংশ খ্রিস্টান এবং বাকিরা অন্যান্য ধর্মের অনুসারী।
সামাজিক নিয়ম ও জীবনধারা
কুয়েতের সমাজে কিছু অনন্য সামাজিক রীতি-নীতিও প্রচলিত। উদাহরণস্বরূপ, কোনো পুরুষ সরাসরি কোনো নারীকে উপহার দিতে পারেন না; তাকে উপহার পৌঁছাতে স্ত্রী, মা বা বোনের সাহায্য নিতে হয়।
এছাড়া, পুরনো জিনিস ফেলে দেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে ব্যতিক্রমী সংস্কৃতি। দেশটির বাসিন্দারা ব্যবহৃত জিনিসপত্র, যেমন টিভি বা সোফা, ডাস্টবিনে না ফেলে রাস্তার পাশে রেখে দেন— যেগুলো অনেক সময় নতুনের মতোই ভালো অবস্থায় থাকে।