যুক্তরাষ্ট্র গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নানগরহারে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অবস্থান লক্ষ্য করে সবচেয়ে বড় ‘অপারমাণবিক বোমা’ হামলা চালায়। জিবিইউ-৪৩ /বি ম্যাসিভ অরডিন্যান্স এয়ার ব্ল্যাস্ট (এমওএবি) বা সামরিক বাহিনীর ভাষায় ‘মাদার অব অল বোম্বস’টি আচিন অঞ্চলে আইএসের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কে ফেলা হয়।
বলা হচ্ছে, এ পর্যন্ত কোনো যুদ্ধে ব্যবহার করা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অপারমাণবিক বোমা এটি। আফগান সরকার বলছে, এই বোমা হামলায় আইএসের অন্তত ৩৬ জন সদস্য নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে।
আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল জন নিকলসন ওই বোমা নিক্ষেপের অনুমোদন দেন। এই বোমার দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট। ওজন নয় হাজার ৮০০ কেজি। এটি জিপিএস দ্বারা পরিচালিত বোমা। এই বোমাটি ফেলতে ব্যবহার করা হয় পরিবহন বিমান এমসি ১৩০। মাটিতে আঘাত হানার কিছুক্ষণ পরই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।
এই বোমার প্রাথমিক প্রভাব হলো এটি বিশাল বিস্ফোরণ তরঙ্গ সৃষ্টি করে। বলা হয়ে থাকে চারপাশের এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ওই বিস্ফোরণ তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। এর শক্তি ১৮ হাজার পাউন্ড টিএনটি। বোমাটিতে বিস্ফোরণের তীব্রতা বাড়াতে ব্যবহার করা হয় অ্যালুমিনিয়ামের পাতলা আবরণ।
ভূগর্ভস্থ স্থাপনা ও সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার লক্ষ্যে বাংকার ধ্বংসকারী এই বোমাটির নকশা করা হয়। ইরাক যুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য এই অস্ত্রের উন্নতি ঘটানো হয়। এর প্রতিটি বোমা তৈরিতে এক কোটি ৬০ লাখ ডলার খরচ হয়েছে বলে খবর রয়েছে। ২০০৩ সালে এই বোমার পরীক্ষা চালানো হয়। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানেই এই বোমা প্রথম ব্যবহার করা হয়। এমওএবি তৈরি করেছে আলাবামা-ভিত্তিক কোম্পানি ডায়নেটিকস।
তবে এখনো পর্যন্ত এমওএবি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে ভারী ‘নন-নিউক্লিয়ার’ বোমা নয়। সবচেয়ে বড় বোমা হলো ম্যাসিভ অরডিন্যান্স পেনেট্রেটর বা এমওপি। এর ওজন ৩০ হাজার পাউন্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি রাশিয়াও তাদের সবচেয়ে বড় প্রথাগত বোমার উন্নয়ন ঘটিয়েছে। তাদের বোমার নাম ‘ফাদার অব অল বোম্বস’ বা এফওএবি।