বার্তাবাংলা ডেস্ক :: ভাস্কর্য প্রতিটি দেশের শিল্প সংস্কৃতির একটি বড় উদাহরণ। প্রতিটি দেশেই কিছু না কিছু ভাস্কর্য দেখতে পাওয়া যাবে। যা সেই দেশের সংস্কৃতি কিংবা কোনো এক ঘটনাবহুল সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু ভাস্কর্য বলতেই গোটা পৃথিবীর মানুষ দৃশ্যমান, বড় এবং উচু কোনো স্থাপনা বোঝে। কিন্তু সত্যিই কি ভাস্কর্য হতে গেলে ভাস্কর্যকে উচু কিংবা বড় হতে হয়, এর অবশ্য কোনো আভিধানিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর এই খুঁজে না পাওয়ার সূত্র ধরেই লন্ডনভিত্তিক ভাস্কর জন্টি হুরিটজ তৈরি করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ছোটো বা ক্ষুদ্র ভাস্কর্য।
জন্টি হুরিটজের তৈরি ভাস্কর্য এতোটাই ক্ষুদ্র যে আপনি চাইলেও খালি চোখে দেখতে পারবেন না। আপনাকে হুরিটজের কাজ দেখতে হলে সঙ্গে করে একটি ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ নিয়ে যেতে হবে। তবেই আপনি বিস্ময়ের সঙ্গে দেখতে পারবেন সেই ভাস্কর্যগুলো। আর এটা নিশ্চিত যে ভাস্কর্যগুলো দেখার পর আপনার চেনা ভাস্কর্যগুলো সম্পর্কে ধারণা কিছুটা হলেও পাল্টাবে।
হুরিটজ প্রায় ৮০, ১০০ এবং ২০ মাইক্রন সাইজের অনেকগুলো ক্ষুদ্র ভাস্কর্য তৈরি করেছেন। আর এই ভাস্কর্যগুলো তৈরি করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও অদ্ভুত সব জিনিস বেছে নিয়েছেন তিনি। সূচের পেছনের যে সূক্ষ্ণ ছিদ্র থাকে সেখানে তিনি স্থাপন করেছেন একটি নৃত্যরত নারীর ভাস্কর্য, অথবা একটা মৃত পিপড়ার মাথায় একসঙ্গে বেশ কয়েকজন নগ্ন নারীর অবয়বের ভাস্কর্য। এমনকি একটি মাত্র চুলের উপরও তিনি ভাস্কর্য তৈরি করেছেন।
হাফিংটন পোস্টকে দেয়া এ সাক্ষাতকারে হুরিটজ বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বা আমরা যেভাবে দেখতে অভ্যস্ত তার বাইরে গিয়ে আমার কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জের ছিল। এছাড়াও আমার কাজগুলো দর্শকদের দেখানেও আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আমার জন্য। কারণ এগুলো খালি চোখে কেন, বাজারে পাওয়া যায় এমন আতস কাচ দিয়েও দেখতে পাওয়া যাবে না। এগুলো দেখতে চাই ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হুরিটজ প্রকৌশলবিদ্যায় ডিগ্রি লাভ করেন। আর সেখান থেকেই তিনি মূলত বিজ্ঞানের সঙ্গে আর্টের সম্মিলন ঘটনোর চেষ্টা করেন। কিভাবে বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সবার জন্য আর্টকে উপস্থাপন করা যায়, এই চিন্তাই শিল্পী হুরিটজকে উৎসাহী করে এরকম এক দুর্দান্ত কাজ করতে।