বার্তাবাংলা রিপোর্ট :: প্রতিদিন একটু ব্যায়াম করলেই কি স্লিম হওয়া যায়? না৷ তাতে বড়জোর বর্তমান ওজন ধরে রাখা যায়৷ যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্লিম এবং সুস্থ শরীর চাইলে ব্যায়ামের সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই৷
মেদহীন টানটান একটা শরীর কে না চান! বেশি চান তাঁরা, আরাম-আয়েস আর ভোজনবিলাস যাঁদের শরীরে মেদ জমিয়ে জমিয়ে জীবনকেও দাঁড় করিয়েছে ঝুঁকির মুখে৷ এ অবস্থায় অনেকেই নেমে পড়েন ব্যায়াম করে মেদ ঝরানোর চেষ্টায়৷ পাশাপাশি খাওায়া-দাওয়াও চলে মোটামুটি আগের মতো৷ যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি একেবারেই কার্যকর ব্যবস্থা নয়৷ বিশেষ করে সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের মতো ব্যায়াম করে মেদ ঝরানোর যে প্রচলিত ধারণাটি রয়েছে, তাকে একরকম হাস্যকরই বলছেন তাঁরা৷
প্রতিদিন একটু ব্যায়াম করলেই কি স্লিম হওয়া যায়?
অ্যামেরিকান কলেজ অফ স্পোর্টস মেডিসিনের অনুশীলন শরীরতত্ব বিশেষজ্ঞ ড. জোসেফ ডোনলি বলেছেন, এতে শুধু হৃদরোগকেই দূরে রাখা যেতে পারে আর কিছু নয়, ‘‘এটা আসলে ওজন কমানোর ব্যবস্থা নয়৷ ওজন কমাতে গেলে সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৩০০ মিনিট অন্তত ব্যায়াম করতেই হবে৷ সপ্তাহে মোট ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করে বড়জোর এখনকার ওজনটাকে ধরে রাখা যাবে৷”
ইউরোপে অতিরিক্ত ওজনের মানুষের সংখ্যা দিনদিন বেড়ে চলেছে৷ দেখা দিচ্ছে মোটা মানুষের মধ্যে নানা অসুখ-বিসুখ – যা অবশ্যই চিন্তার বিষয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবগুলো দেশেই গত কয়েক শতক ধরে এই সমস্যা শুরু হয়েছে৷ জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অতিরিক্ত মোটা হওয়ার সমস্যার বিরুদ্ধে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছে৷
যুক্তরাষ্ট্রের অবার্ন ইউনিভার্সিটি মন্টগোমারির অধ্যাপক ড. মিচেল ওলসন বুঝিয়ে বলেছেন ব্যাপারটা, ‘‘এক পাউন্ড স্নেহ জাতীয় খাদ্য খেলে আমাদের শরীরে সাড়ে তিন হাজার ক্যালরি যোগ হয়৷ তারপর আপনি যদি ম্যারাথন দৌড়বিদদের মতো পুরো ২৬ মাইলও দৌড়ান, তাতে প্রতি মাইলে ১০০ গ্রাম হিসেবে সব মিলিয়ে মাত্র ২৬০০ ক্যালরি ঝরাতে পারবেন৷ সেই এক পাউন্ডের কারণে পাওয়া ক্যালরি থেকে ৯০০ ক্যালরি কিন্তু থেকেই যাবে৷”
তাই প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ মিনিট ব্যায়াম বা ঘাম ঝরানোর মতো অন্য কিছু করার পাশাপাশি খুব সাবধানে খাওয়া-দাওয়া করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ একটু ব্যায়াম করে, হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে বা সাঁতার কেটেই মেদ কমিয়ে ফেলবেন – এমন ভাবাটা মস্ত বড় ভুল৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুলের এ স্বর্গে বাস করা মানে মেদবহুল দেহের যন্ত্রণাকেই মেনে নেয়া৷