বার্তাবাংলা ডেস্ক »

এস এ চৌধুরী, মৌলভীবাজার::মৌলভীবাজারে দাদনের লাভের ৫০০ টাকার জন্য এক দিন মজুরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টিকে হার্টএটাকে মৃত্যু বলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা বলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজারে ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত দিনমজুর পরিবারের সদস্যরা জানান, কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের ভূমিগ্রামের মৃত আবাস মিয়ার ছেলে ছমেদ মিয়া পার্শ্ববর্তী সরিষকান্দি গ্রামের বশির মিয়ার ছেলে দাদন ব্যবসায়ী বদরুল ইসলামের কাছ থেকে বছর খানেক পূর্বে ২ মন ধানের লগ্নি নেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত সোমবার রাত ১০টার দিকে মুন্সীবাজারের ভিতর বাজার এরশাদ মিয়ার চায়ের দোকানে গিয়ে ছমেদ দাদনের টাকার এক হাজার পাঁচশত টাকার মধ্যে বদরুলকে এক হাজার টাকা দেন। এ সময় সমুহ টাকা দেয়ার জন্য ছমেদকে চাপ দেন বদরুল। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বদরুল। মারধর করেন ছমেদকে। কিল, ঘুষি আর চরথাপ্পর মারার এক পর্যায়ে মাটিতে ঢলে পড়ে ছমেদ। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ডাক্তার সুমন আচার্য্যেরে ফার্ম্মেসীতে নেন। ডাক্তার সুমন ছমেদের শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। সাথে সাথে একটি এম্বুলেন্স যোগে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনার পর প্রভাবশালী একটি মহল বদরুলের পক্ষ নিয়ে ঘটনাটি হার্টএটাক হয়ে মারা যায় বলে প্রচার করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। এই মহল গতকাল  মঙ্গলবার সকালে তাড়াহুড়ো করে ছমেদের লাশ দাফনের উদ্যোগ নিলে তার আত্মীয়স্বজনরা এতে বাঁধা দেন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী মহলের চাপে লাশ দাফনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
ঘটনাটি স্থানীয় সংবাদকর্মীরা জানার পর মুন্সীবাজার ইউনিয়নের ভূমিগ্রামে ছমেদের বাড়িতে গেলে তার মা এশা বিবি বলেন, ধানের লাভের টাকার জন্য বদরুল আমার ছেলেকে মারধর করে মেরে ফেলে। সাংবাদিকদের পরিচয় পাওয়ার পর বাড়িতে অবস্থানকারী কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলার জন্য এশা বিবিকে বলেন। এক পর্যায়ে এক মহিলা ছমেদের মাকে সংবাদকর্মীর সামনে থেকে নিয়ে যান।
মুন্সীবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব তরফদার দিন মজুরের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে বলেন, শুনেছি সে অসুস্থ ছিল। এখন খোঁজে দেখতে হবে সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেল কি না ?
কমলগঞ্জ থানার ওসি নীহার রঞ্জন নাথ বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে হৃদরোগে এক দিন মজুর মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়েছি। এ ব্যাপারে পরিবারের কেউ অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারপরও তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
তবে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চেয়ে সরিষকান্দি গ্রামে দাদন ব্যবসায়ী বদরুল ইসলামের বাড়িতে সংবাদ কর্মীরা গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার বাড়ির লোকজন এ বিষযয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »