বার্তাবাংলা ডেস্ক »

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনীতিকে নষ্ট করেছিল বিএনপি। তারা রাজনীতিতে কালো টাকা এবং মাসলম্যান (পেশীশক্তি) আমদানি করেছিল। তিনি বলেন, বিএনপি শুধু খুনির দল নয়, তারা ধর্ষণকারীরও দল।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিয়নের (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও স্বাধীনতা পরিষদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মন্ত্রী এ সময় গত ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্যার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিলেন, আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের রোল মডেল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। তার জীবনগাথা একটি সংগ্রামী জীবনের উপাখ্যান। পৃথিবীর সামনে তিনি এক অনুকরণীয় নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত।

‘আজকে যখন দেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, যখন বিশ্ব সম্প্রদায় দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন, তখন একটি দল বিএনপি আর তার মিত্ররা প্রশংসা করতে পারে না। তারা শুধু সমালোচনা আর নানা ধরনের বিষোদগারেই ব্যস্ত’ বলেন মন্ত্রী।

বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির অন্য নেতারা গতকাল তাদের বক্তব্যে বলেছেন, আজকে নাকি নষ্ট সময় যাচ্ছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে তারাই রাজনীতিকে নষ্ট করেছিল। জিয়াউর রহমান দম্ভ করেই বলতেন যে, ‘মানি ইজ নো প্রবলেম’। বিএনপিই রাজনীতিতে কেনা-বেচার হাট বসিয়েছিল। বিএনপির বড় বড় নেতা যারা আজকে বড় বড় কথা বলেন, তারা অনেকেই রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া রাজনীতিবিদ। তারা যখন সময় নিয়ে প্রশ্ন রাখেন, তখন মনে করতে হবে সময়টা ভালো যাচ্ছে।

‘বাংলাদেশে গুম-খুনের রাজনীতি চালু করেছিল বিএনপি। খুনের রাজনীতির মাধ্যমেই বিএনপির প্রতিষ্ঠা’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘শুধু খুন নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যাতে হত্যার বিচার না হয়, সেজন্য তারা সংসদে আইন পাস করেছিল। বিএনপির আমলে ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিনহার্ট পরিচালনায় শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।এসব হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার না হওয়ার জন্য তারা আবার ইমডেমনেটি দিয়ে হত্যাকাণ্ডকে আইনগত বৈধতা দিয়েছে। যারা এ ধরনের কাজ করে তারা যখন এ নিয়ে কথা বলে, তখন এটি হাস্যকর হয়ে দাঁড়ায়।’

‘বিএনপি নারী ধর্ষণকারীরও দল’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘২০০১ সালে নির্বাচনের পরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে পুরো গ্রাম অবরুদ্ধ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ শত শত নারীকে ধর্ষণ-নির্যাতন করা হয়েছে। সুতরাং বিএনপি শুধু খুনির দল নয়, তারা ধর্ষণকারীরও দল। কারণ এই নারী ধর্ষণের কোনো বিচার তারা করেনি বরং দলগতভাবে তাদের বাহবা দেয়া হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ অপরাধীদের বিষয়ে ‘শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি’তে অটল উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা কোনো দলের নয়, তারা দুষ্কৃতকারী। এদের কেউ দলীয় পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলে সরকার এবং আমাদের দল এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। যারাই এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও আনা হবে।’

বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন টয়েল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি অরুণা বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, কুয়েত আওয়ামী লীগ সভাপতি সাদেক হোসেন, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »