বার্তাবাংলা ডেস্ক »

উন্নয়নশীল বিশ্বে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় বহু নারীর মৃত্যু ঘটে। তবে কনডমসহ মাত্র তিনটি সস্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করেই এই মৃত্যু ঠেকানো যায়। এর নাম ইউবিটি কিট। বর্তমানে আফ্রিকাজুড়ে ধাত্রীদের ইউবিটি কিট ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। খবর বিবিসির।

পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই কিট দিয়ে চিকিৎসায় সফলতার হার ৯৭ শতাংশ। এই কিট লাখ লাখ মায়ের জীবন বাঁচাতে পারে।

আফ্রিকার কেনিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক ধাত্রী অ্যানি মুলিঞ্জ বলেন, ‘এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা এ পর্যন্ত তিনজনের জীবন বাঁচিয়েছি। সন্তান জন্মদানের সময় কোনো নারীর যখন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়, তখন আমরা এটা ব্যবহারের পরই রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়।’

বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে গর্ভাবস্থায় ও সন্তান জন্মদানের সময় একজন মায়ের মৃত্যু ঘটে। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ। আর এর সমাধান হলো ইউবিটি কিট। এতে রয়েছে একটি কনডম, একটি ক্যাথেটার ও একটি সিরিঞ্জ, যার মূল্য পাঁচ ডলারেরও কম। এটিতে কাজ হয়। এদিকে চিকিৎসাকেন্দ্রে তীব্র রক্তক্ষরণে আক্রান্ত নারীর চিকিৎসায় ৪০০ ডলারেরও বেশি খরচ করতে হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্যই এই খরচ অনেক বেশি।

 

ধাত্রী অ্যানি মুলিঞ্জ বলেন, ‘আমরা কনডমের মধ্যে ক্যাথেটার ঢুকিয়ে কনডমের মুখের কাছের অংশটি বেঁধে ফেলি এবং কনডমটি হাত দিয়ে জরায়ুর ভেতরে ঢুকিয়ে দিই। এরপর সিরিঞ্জ দিয়ে ক্যাথেটারে ভেতরে স্যালাইন ঢুকিয়ে ফুলিয়ে দিই কনডমটি। এটি ফুলে ওঠায় জরায়ুর মুখ বন্ধ হয়ে যায় এবং রক্তক্ষরণ থেমে যায়। আফ্রিকাজুড়ে ধাত্রীদের ওই কিট ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’

ধাত্রী অ্যানি মুলিঞ্জ আরও বলেন, ‘গত বছরের শুরুর দিকের ঘটনা। সন্তান জন্মদানের পর এক মায়ের গর্ভফুল অপসারিত হওয়ার কয়েক মিনিট পরেই তাঁর প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্ত অবিরত পানির মতো গড়িয়ে পড়তে থাকে। তখন ইউবিটি কিট ব্যবহারের কথা মাথায় আসে। আমি জরায়ুতে কনডম ঢুকিয়ে ফুলিয়ে দিই। পাঁচ মিনিটের মধ্যে রক্তক্ষরণের মাত্রা কমে যায়। ওই নারী সুস্থ হয়ে সন্তানসহ বাড়ি ফেরেন।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »