মোহাম্মদ কামরুজ্জামান »

প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, দুর্নীতি, অনিয়ম এবং লুটপাট সরকারের অর্জন নষ্ট করে দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, চুনোপুটি ধরে লাভ নেই। ধরতে হবে রাঘববোয়ালদের। মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরগুলোতে জেকে বসা দুর্নীতি বন্ধে আরো কঠোর হতে হবে। এসব যায়গায় গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটগুলো ভাঙতে হবে। মনে রাখতে হবে, মানুষ না বাঁচলে, সরকার থাকে না।  যুগান্তর

দেয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ডাকসুর সাবেক ভিপি, ষাটের দশকের তুখোর ছাত্র নেতা রাশেদ খান মেনন এদেশে বাম পন্থী শীর্ষ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধী ১৪ দলীয় জোটের শরীক হিসেবে একাধিকবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। মন্ত্রীও ছিলেন। এখন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থানীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। করোনাভাইরাস, বন্যা, স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে তিনি যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যখাতে সমন্বয়হীনতা, অব্যবস্থাপনা, মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতরের মতানৈক্যসহ সামগ্রিক ভঙ্গুর চিত্র ফুটে উঠেছে। এর সঙ্গে দুর্নীতি ও লুটপাটের ভয়াবহ ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। এসব দেখে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য খাতের ওপর আস্থা আরও কমে গেছে। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনা মোকাবেলায় নিজে নিজের মন্ত্রণালয়কে সফলতার নাম্বার দিয়ে যাচ্ছেন। বাস্তবে দেশে করোনাভাইরাস দেখা দেবার পর থেকে কেবল তার মন্ত্রণালয়েই একের পর এক দুর্নীতি আর লুটপাটের ভয়াবহ চিত্রই প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর একজন আরেকজনকে দোষারোপ করেছে। একজন আরেকজনকে দায়ি করেছে। এটি জনগণকে হতাশ করেছে। যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রথম থেকেই করোনা মোকাবেলায় চেষ্টা করে গেছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বন্যা। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় হাতে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। কিন্তু তাকে সহায়তা করার মতো তেমনভাবে অন্যরা এগিয়ে আসেননি। যেকারণে একদিকে যেমন মৃত্যুহার বেড়েছে। অন্যদিকে ঝুঁকিও বেড়েছে। একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, মানুষের জীবনই যদি না থাকে, তাহলে সরকার থাকে না।

রাশেদ খান মেনন বলেন, করোনা আমাদের স্বাস্থ্যখাতের দুর্বলতাকে প্রকাশ করে দিয়েছে। এখন অযথা বিতর্ক না করে দ্রুত এই খাতকে পুনর্গঠন করা উচিত। এই খাতে যারা লুটেরা ও বড় বড় দুর্নীতিবাজ তাদের চিহ্নিত করা উচিত। স্বাস্থ্যখাতে যে শক্তিশালী সিডিকেন্ডের কথা বলা হচ্ছে। তা ভেঙে দেয়া উচিত। একজন সাহেদ কিংবা একজন ডা. সাবরিনাকে কেবল গ্রেফতার করলে বা আইনের আওতায় নিলে চলবে না। মনে রাখতে হবে, তারা চুনোপুটি। রাঘববোয়ালরা এখনও ধরাছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় নিতে হবে। তা না হলে স্বাস্থ্য খাতে লুটপাট অব্যাহত থাকবে। মানুষের আস্থা ফিরে আসবে না।

প্রবীন এই রাজনীতিক বলেন, করোনা ভাইরাসের সময় স্বাস্থ্যখাতে উপসর্গগুলো প্রকাশিত হয়েছে। এবার প্রয়োজন এই উপসর্গগুলো দুর করতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া। তিনি বলেন, অন্যান্য খাতেও যেভাবে একের পর এক দুর্নীতি ও লুটপাটের চিত্র প্রকাশিত হচ্ছে, তা বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। সিন্ডিকেট প্রথা ভাঙ্গতে হবে।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »