রাজন মিত্র »

করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের প্রস্তুতকৃত পরীক্ষামূলক টিকার ৩০ কোটি ডোজ পেতে চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য টিকাটি প্রস্তুতে ১২০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি করেছে মার্কিন সরকার। টিকাটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। তবে টিকাটির ১০০ কোটি ডোজ উৎপাদনে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে এর মালিকানা প্রতিষ্ঠান এস্ট্রাজেনেকা। প্রতিষ্ঠানটি আরো জানায়, ইতিমধ্যে ৪০ কোটি ডোজ বিক্রির চুক্তি করেছে তারা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

খবরে বলা হয়, করোনায় বিশ্বজুড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অর্থনীতি। এখনো ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো ওষুধ বা টিকা তৈরি হয়নি। তবে সম্ভাব্য টিকাগুলো নিয়েই বিশ্বনেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা বা ওষুধ ব্যতিত করোনায় থমকে যাওয়া অর্থনীতি সচল করা সম্ভব নয়। ভাইরাসটির বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একটি টিকার ব্যবস্থা করতে বললে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তি অনুসারে, তাদের সম্ভাব্য টিকাটি তৈরিতে ১২০ কোটি ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এর বিনিময়ে টিকাটি তৈরির পর ৩০ কোটি ডোজ দিতে হবে মার্কিন সরকারকে। এছাড়া, চুক্তিটির আওতায় টিকাটির ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে ৩০ হাজার মার্কিনির উপর এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগও করা হবে। প্রসঙ্গত, টিকাটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা তৈরি করলেও এর বাণিজ্যিক সত্ত্বাধিকার দেয়া হয়েছে এস্ট্রাজেনেকাকে।
মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এলেক্স আজার চুক্তিটি নিয়ে বলেন, এস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে এই চুক্তি ২০২১ সালের মধ্যে নিরাপদ, কার্যকরী ও বিস্তৃতভাবে প্রাপ্য একটি টিকা তৈরির পথে বিশাল এক মাইলস্টোন। আগামী অক্টোবরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে এর প্রথম ডোজ এসে পৌঁছতে পারে।

অক্সফোর্ডের টিকাটি প্রাথমিকভাবে সিএইচএডিওএক্স১ এনসিওভি-১৯ নামে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে এর নাম বদলে এজিডি১২২২ রাখা হয়। করোনার বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা এখনো অনিশ্চিত। এস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, তারা টিকাটির ১০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের সক্ষম। আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই সরবরাহ শুরু করতে পারবে। এর মধ্যে ৪০ কোটি ডোজ বিক্রি বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এখন পর্যন্ত।

এস্ট্রাজেনেকা ছাড়াও করোনার টিকা নিয়ে কাজ করা অন্যান্য শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না ও সানোফি। বৃহ¯পতিবার এস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তি বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, টিকা ও ওষুদ নিয়ে অনেক কাজ করছে তার প্রশাসন। আগামী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে বড় ধরণের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানান তিনি।

এদিকে, এস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, তারা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সরকার ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের টিকাটি উৎপাদন, বরাদ্দ ও বিক্রির ব্যাপারে আলোচনা করছে। এর মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটও রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এক বছরে এস্ট্রাজেনকার টিকাটির ৪০ কোটি ডোজ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »