১৯৫৭ সালের ৬, ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের কাগমারীতে মওলানা ভাসানী ৫৪টি তোরণের মধ্য দিয়ে ‘ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন’ উদ্বোধন করেন। কাগমারী সম্মলনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের ‘ওয়ালাইকুম আসসালাম’ বলে পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) স্বায়ত্তশাসনের দাবি উত্থাপন করেন তিনি। সম্মেলনে মওলানা ভাসানী স্বায়ত্তশাসনের যে দাবি জানিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে স্বাধীনতার আন্দোলন দানা বাঁধে। আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) সেই ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের ৬২ বছর।
কাগমারী সম্মেলনেই মওলানা ভাসানী সর্বপ্রথম বিশ্ববাসীর মনে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধিকার আন্দোলন সম্পর্কে ধারণা দেন। কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানীর দাবিকৃত স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই পর্যায়ক্রমে স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ নেয় এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট (হক-ভাসানী) তৎকালীন পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণ মানুষের ব্যাপক সমর্থনে বিজয়ী হয়।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার প্রদান করে। তার মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল বাংলা ভাষার প্রাধান্য ও পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা। মওলানা ভাসানী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এবং গণ মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে সংঘটিত আন্দোলনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। ১৯৫১ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকার বার কাউন্সিল লাইব্রেরিতে সন্ধ্যা ৬টায় মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে নেতাকর্মীদের সভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ গঠিত হয়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে যে আন্দোলন হয় সেই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন বরকত, রফিক, জব্বার, সালাম, শফিক, আউয়াল। আহত হয় বহু ছাত্র ও সাধারণ মানুষ। ১৯৫৩ সালে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।