আপনার পতিত জমিতে আনারস চাষ করে বাড়তি আয় করার সুযোগ রয়েছে। হানিকুইন, জায়ান্ট, ঘোড়াশাল ও জলঢুপি জাতের আনারস চাষ করতে পারেন। এসব জাতের আনারসে ভিটামিন সি, ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। তবে জানতে হবে চাষ পদ্ধতি এবং পরিচর্যার নিয়ম-কানুন।
এলাকা
সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, চট্টগাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার পতিত জমিতে আনারস ভালো জন্মায়।
ফলপচা রোগ
এ রোগ খুবই মারাত্মক। সেরাটোসাইটিস প্যারাডোসা নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের কারণে উৎপাদন শূন্যের কাছাকাছি আসতে পারে।
লক্ষণসমূহ
ক. ফলের উপর পানি ভেজা দাগ পড়ে পরে হলুদ হয়ে গাঢ় বাদামি ও কালচে রং ধারণ করে।
খ. আক্রান্ত অংশের টিস্যুসমূহ নরম হয়ে পচে যায়।
গ. পাকা ফল আক্রান্ত হলে একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গন্ধ পাওয়া যায়।
ঘ. পাতা আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ গাছ কালো হয়ে পচে যায়।
দমন ব্যবস্থা
১. বাগান পরিষ্কার রাখতে হবে।
২. রোপণ দ্রব্য রোগ প্রতিরোধী জাতের সাকার ব্যবহার করতে হবে।
৩. রোপণের আগে সাকার দুই ঘণ্টা হালকা রোদে শুকিয়ে নিলে রোগের সম্ভাবনা কম থাকে।
৪. সংগ্রহকৃত আনারস প্যাকিংয়ের আগে ঝুড়িকে ০.৩% ফরমালিন দিয়ে রোগমুক্ত করতে হবে।
৫. ফলের কর্তিত গোড়ায় ১০% বেনজোইক অ্যাসিড দ্রবণে ডুবিয়ে নিতে হবে।
কাণ্ডপচা রোগ
এ রোগ ফাইটোপথোরা প্যারাসাইটিকা নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে।
লক্ষণসমূহ
ক. প্রথমে পাতা হলুদ ও পরে বাদামি হয়ে যায়।
খ. কাণ্ডের গোড়ার অংশ ও মূল কালো বর্ণ ধারণ করে পচতে শুরু করে।
গ. এক পর্যায়ে সম্পূর্ণ গাছ মরে যায়।
দমন ব্যবস্থা
১. বাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
২. রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে।
৩. বাগানে যেন পানি না জমে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. রোগ প্রতিরোধের জন্য রোপণের আগে ৪ঃ৪ঃ৫০ অনুপাতে বোর্দোমিক্সচার দ্রবণে চারা ডুবিয়ে নিতে হবে।
ছাতরা পোকা
ক. এ পোকা গাছের পাতা, কাণ্ড, ফল প্রভৃতি থেকে রস চুষে খেয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে।
খ. মূল বা কাণ্ড ও মূলের সংযোগস্থলে আক্রমণ হলে গাছ নেতিয়ে পড়ে।
গ. ফল আক্রান্ত হলে পচে যায়।
ঘ. আক্রান্ত স্থান দিয়ে ভাইরাস প্রবেশ করে অ্যানাসা উইল্ট রোগ সৃষ্টি করে।
দমন ব্যবস্থা
১. রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে।
২. ফল সংগ্রত করার পর শুকনো লতা-পাতা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
৩. ম্যাথিয়ন-৫৭ ইসি ৮ সিসি ২.৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।