বার্তাবাংলা ডেস্ক :: সরকার যুদ্ধাপরাধীর বিচারের নামে মুলো ঝুলিয়ে তরুণদের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে মনে করছে তরুণসমাজ।
মানবতাবিরোধী অপরাধী কাদের মোল্লার রায়ে বিক্ষুব্ধ তরুণসমাজ তার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে আন্দোলন করছে।
আবদুল কাদের মোল্লার বিচার প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করা আশিকুল ইসলাম বলেন, “বর্তমান সরকার গত নির্বাচনের সময় বলেছিলো যুদ্ধাপরাধীদের যথাযথ বিচার তারা করবে। সে আশাতেই আমরা তরুণরা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে সে বিচার চেয়েছিলাম। কিন্তু এই কি তার বিচারের নমুনা!”
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবা জান্নাত বলেন, “যদি সরকার রাজাকারদের ফাঁসি না দেয় তাহলে তার ফলাফল ভালো হবে না। এ তরুণদের ভোটেই যেমন তারা ক্ষমতায় এসেছিলো আবার তাদের প্রতিরোধেই সরকারকে কঠোর মূল্য দিতে হতে পারে।”
এসময় হাবিবা আরও বলেন, “যারা আমাদের মা বোনদের সম্মান নিয়ে ৭১’ এ ছিনিমিনি খেলেছিলো তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করব। এ রাজাকাররাই আমাদের শতশত মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যে প্রহসন চলছে তা বন্ধ না করা হলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অসম্মান দেখানো হবে।”
“অন্য কোনো বিষয় নয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না তরুণসমাজ” বলে সংশ্লিষ্টদের হুঁশিয়ার করেছেন তরুণদের পক্ষে কুহু মান্নান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের এ শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি না। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগের পাঁচটি প্রমাণিত হয়েছে। সেখানে কোন যুক্তিতে যাবজ্জীবন শাস্তি হতে পারে তার জবাবদিহিতা করতে হবে। এভাবে জনগণকে ঠকানো যাবে না।”
কুহু আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সবাই নাকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। তবে কেনো বারবার জামায়াতের সঙ্গে আতাত করা! আজ আমি আমার বোনের সম্ভ্রমহানীর বিচার চাই, আমার ভাই হত্যাকারীর ফাঁসি চাই, নয়তো রাজপথ ছাড়ব না।”
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী তরুণরা আবদুল কাদের মোল্লাসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি করছেন। যদি এর অন্যথা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাবে বলেও জানান তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও তরুণরা এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায় হওয়ার পর বিকেলের দিকে তরুণরা শাহবাগ এলাকায় ভিড় জমাতে শুরু করে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার মুহূর্তে তা ছড়িয়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বর পর্যন্ত। রাত বাড়তে থাকার সঙ্গে বাড়তে থাকে বিক্ষুব্ধ মানুষের সংখ্যাও। যোগ দেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রজ্বলিত মোমবাতি ও মশালের আলোয় সৃষ্টি হয় অন্যরকম প্রতিবাদী আবহ।