নাগারনো-কারাবাখে প্রায় দুই সপ্তাহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। ১০ অক্টোবর মধ্যরাত থেকেই এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই ল্যাভরভ।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার সকাল থেকে মস্কোয় টানা ১০ ঘণ্টার আলোচনা শেষে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিবাদপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখের মালিকানা ঘিরে প্রতিবেশী দুই দেশে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ১৯৯০ এর দশকের পর এই অঞ্চলে এত বড় সংঘাত আর দেখা যায়নি।
গত দুই সপ্তাহে এ সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩০০ জন। উভয়পক্ষের গোলা, রকেট ও ড্রোন হামলায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। এ সহিংসতার জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করেছে।
যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুরোধ জানালেও তাতে রাজি হচ্ছিল না আর্মেনিয়া-আজারবাইজান। এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার দুই দেশের নেতাদের কাছে ফোন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সময় তিনি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মস্কোয় গিয়ে শান্তি আলোচনায় অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানান। তার এ আহ্বানে সাড়া দিয়েই শনিবার আলোচনায় বসেছিলেন দুই দেশের মন্ত্রীরা।
রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক জানিয়েছেন, আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে মানবিক কার্যক্রমে মধ্যস্থতাকারীর দায়িত্ব পালন করবে রেড ক্রস।
আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে শুধু মানবিক কারণেই। তিনি বলেন, আমাদের দেখতে হবে চুক্তি মোতাবেক এ যুদ্ধবিরতি সত্যিই কার্যকর হয় কি না। তারা বন্দি বিনিময় করে কি না বা দলগুলো কয়েক দশকের এ বিরোধ মেটাতে সত্যিই আলোচনার টেবিলে যেতে রাজি কি না।
ল্যাভরভ মস্কোয় আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মন্ত্রীদের আলোচনার বিষয়ে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করবে ইউরোপের সুরক্ষা ও সহযোগিতা সংগঠনের (ওএসসিই) মিনস্ক গ্রুপ।
বৈঠকের বিষয়ে মুখ খোলেননি আর্মেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব মাতসাক্যানিয়ান ও আজার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেহুন বেরামভও।