দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ। তিনি বলেছেন, দেশে গত কয়েক বছরে তিন হাজারের বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তারা কি বিচার পাবে না? তাদের পাশে রাষ্ট্র দাঁড়াবে না? তাদেরকে কি রাষ্ট্র এই অধিকার দেবে না? সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে হারুন অর রশীদ এসব কথা বলেন।
নিজ নির্বাচনী এলাকা চাপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিভিন্ন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি গত বছর ২৪ এপ্রিল জাতীয় সংসদে এমপি হিসেবে শপথ নেই। তার মাত্র দুইদিন পর ৩০ এপ্রিল আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রকাশ্যে আরেকটি বিচারবহির্ভূত দিনের বেলায় অমানবিকভাবে হত্যাকাণ্ড হয়। একটি পেশাদারি প্রতিষ্ঠান বিকেল তিনটার সময় একজন সাধারণ নাগরিককে ধরে নিয়ে এসে তাকে গুলি করে হত্যা করে এবং পুলিশি এজাহার দাখিল করে। এই ঘটনা ঘটে থানা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। সেই এজাহারে বলা হয়, পুলিশের ওপর বেপরোয়া আক্রমণ চালানো হয়েছে। কিন্তু অস্ত্র দেখানো হয়েছে হাতে তৈরি অস্ত্র।
স্পিকারকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই ঘটনায় দুজন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। তাদের একজন আমাদের এলাকার ভাইস চেয়ারম্যান ক্যান্ডিডেট ছিলেন। আর তার বড় ভাই। অথচ ঘটনার দিন তারা সংসদে এসে সংসদ গ্যালারি থেকে আমাদের অধিবেশন দেখেছেন। সংসদে ঢুকতে হলে সবার অনুমতি নিতে হয়। এই সংসদের কাছে এ ধরনের ডকুমেন্টস আছে। তাদের নামে আমি পাস ইস্যু করেছিলাম। ৩০ তারিখ তারা দর্শক গ্যালারি থেকে এই সংসদে উপস্থিত ছিল। তাদেরকে সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিল উল্লেখ করে মামলার আসামি করা হয়েছে। এই ধরনের পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে মানুষকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, উপর্যুপরি উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হচ্ছে এবং নাটক বানাচ্ছে।’
এমপি হারুন অর রশীদ বলেন, আমি যা বলছি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি। এগুলো ১০০ ভাগ সত্য। কিঞ্চিৎ পরিমাণ মিথ্যা নাই। আমাদের এলাকার এক ছাত্রকে ঢাকার শেওড়াপাড়া থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এলাকায় ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়। ঢাকা থেকে তুলে নেয়ার চারদিন পর তাকে ক্রসফায়ারে দেয়া হয়। এ ধরনের উপর্যুপরি ঘটনা ঘটেই চলেছে।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের আজকে বিচার হচ্ছে। আদালত তাদের পরিবারের মামলা গ্রহণ করেছে তদন্ত কাজ চলছে। কিন্তু বাংলাদেশে আরও প্রায় তিন হাজারের অধিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তারা কি বিচার পাবে না?