হাতকড়ার বদলে আসামির হাতে তুলে দেয়া হলো গোলাপ ফুল। আসামিরাও হাতকড়ার বদলে ফুল উপহার পেয়ে যারপরনাই বিস্মিত। শেরপুরের নকলার চন্দ্রকোনা তদন্ত কেন্দ্রে রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নকলা উপজেলার বন্দটেকি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক এবং তার ছেলে সোলে আহম্মেদ প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি নিয়ে মারপিটের মামলার আসামি। আদালত থেকে তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানাটি তামিলের জন্য কয়েকদিন আগে চন্দ্রকোনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কয়েকদিন তাদের বাড়ি এবং সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালানো হলেও পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পরে তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আসামি বাবা-ছেলেকে আত্মসমর্পণের জন্য উদ্ধুদ্ধ করেন। একপর্যায়ে রোববার দুপুরে আব্দুর রাজ্জাক এবং সোলে আহম্মেদ স্বেচ্ছায় চন্দ্রকোনা তদন্ত কেন্দ্রে আত্মসমর্পণ করলে তাদের লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নেন তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান।
পরে তাদেরকে হাতকড়া ছাড়াই আদালতে সোপর্দ করা হয়। আসামিদের স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের বিষয়টি নকলা আমলি আদালতকে অবগত করা হয়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় আদালতের বিচারক বাবা-ছেলের জামিন মঞ্জুর করলে তারা জামিনে মুক্ত হন।
জামিনে মুক্তি পেয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ওয়ারেন্টের কথা হুইন্না খুব ভয়ে আছিলাম। পুলিশ, কোর্ট কাচারি এইগুলাত জড়াবার চাইন্না। তাই পলাইছিলাম। পরে চিন্তাভাবনা কইরা পুলিশের কাছে ধরা দেই। কিন্তু পুলিশ আমগরে আশ্বার্য কইরা হ্যান্ডকাফের বদলে ফুল দিলো। ইমুন পুলিশ জীবনেও দেহি নাই। তিনি জানান, তাদেরকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
চন্দ্রকোনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম স্যার একটি স্লোগান চালু করেছেন ‘মানবিক পুলিশের চোখে জনতার আকাঙ্খা লেখা থাকে’। আমরা নানাভাবে চেষ্টা করছি যাতে মানুষকে আরও জনমুখি সেবা দেয়া যায়। যেহেতু গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি রাজ্জাক এবং তার ছেলে সোলে আহম্মেদ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন। তাই তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে সম্মানের সাথে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। যাতে অন্যান্য আসামিরাও উদ্ধুদ্ধ হয়ে আইনের হেফাজতে আসে সেজন্যই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।