নব্বই দশকের সাড়া জাগানো নায়ক সালমান শাহ। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় তিনি আত্মহত্যা করেন। সালমান শাহ’র মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলেছে, পারিবারিক কলহ, প্রেম, দাম্পত্য জীবন, অভিমান ও অভিনয় জীবনের নানা দ্বন্দ্বে আবেগপ্রবণ হয়ে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।
জানা যায়, সালমান শাহ যেদিন আত্মহত্যা করেছিলেন সেদিন সামিরার সঙ্গে তার প্রচণ্ড ঝগড়া হয়েছিল। ঝগড়ার এক পর্যায়ে রাত ১২টার দিকে সালমানের মোবাইলে শাবনুরের ফোন আসে। এ সময় রাগে সালমান তার সিটিসেল মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলেন। এদিকে সামিরা বাসা থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে সালমান বাড়ির দারোয়ানকে পাঠালে দারোয়ান ও তার ব্যক্তিগত সহকারি আবুল হোসেন তাকে বুঝিয়ে আবার গেট থেকে ফেরত নিয়ে আসেন। এ সময় সালমান শাবনুরের দেওয়া উপহার, ফ্যান আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলেন। সামিরা বাসায় কান্না করতে থাকেন। মাঝরাতে তাদের আরও ঝগড়া হয়।
সকালে সালমান শাহ ঘুম থেকে উঠে গৃহপরিচারিকা মনোয়ারা বেগমের কাছ থেকে পানি পান করেন। তারপর বাথরুমে যান। এরপর আবার রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেন। অনেকক্ষণ পর বাসার গৃহপরিচারিকার ছেলে ওমরের জামা নেওয়ার জন্য দরজায় অনেক্ষন আওয়াজ করলেও দরজা না খোলায় পরবর্তীতে সবাই মিলে দরজা খুলে দেখেন সালমান ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন। সামিরার চিৎকারে তখন সালমানের ব্যক্তিগত সহকারী আবুল হোসেনসহ অনেকে ছুটে আসে।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় নিজ বাসায় সালমান আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে সালমান একটি সুইসাইড নোট লিখে রাখেন। সেই সময় সালমানের বাসা থেকে পুলিশ এই সুইসাইড নোট বা আত্মহত্যার চিঠিটি উদ্ধার করে।
সালমান শাহের হাতে লেখা সুইসাইড নোট
সেই সুইসাইড নোটে সালমান লিখেছিলেন, ‘আমি চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার, পিতা-কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ১৪৬/৫, গ্রিন রোড, ঢাকা-১২১৫ ওরফে সালমান শাহ এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে আজ অথবা আজকের পরে যেকোনো দিন মৃত্যু হলে তার জন্য কেউ দায়ী থাকবে না। স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে আমি আত্মহত্যা করছি।’
সালমানের লিখা এই সুইসাইড নোটের শেষে কারও স্বাক্ষর ছিল না। পরে সিআইডির হস্তবিশারদরা চিঠিটা পরীক্ষা করেন এবং তারা বলেন, এটা সালমান শাহের হাতের লেখা। এরপর সেই সময় এ সুইসাইট নোট প্রকাশ্যে এলে বিষয়টি অস্বীকার করেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যারা আমার ছেলেকে খুন করেছে তারাই এই চিঠি লিখেছে।’