সুন্দরবনের একমাত্র বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে লবণপানির প্রজাতির কুমির পিলপিলের দেওয়া ৪৪টি ডিমের মধ্য থেকে এবার মাত্র চারটি বাচ্চা ফুটেছে। অতিবৃষ্টি ও ইনকিউবেটরের ত্রুটির কারণে আশানুরূপ বাচ্চা ফোটেনি বলে জানিয়েছেন করমজল পর্যটন ও বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আজাদ কবির।
মো. আজাদ কবির জানান, গত ১২ জুন প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরপারের বাসায় ৪৪টি ডিম দেয় কুমির পিলপিল। এরপর কুমিরটির নিজ বাসায় ২১টি রেখে বাকিগুলোর মধ্যে ১২টি কেন্দ্রের নতুন ইনকিউবেটর আর ১১টি পুরনো ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফুটানোর জন্য সংরক্ষণ করা হয়। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর শনিবার সকালে কেন্দ্রের নতুন ইনকিউবেটরে রাখা ১১টির মধ্যে চারটি ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হয়।
বাকি ডিমগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেগুলো থেকে বাচ্চা ফুটে বের হয়নি। তবে চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্রজননকেন্দ্র প্লাবিত হওয়ায় ডিমসহ অন্যান্য বন্য প্রাণী ও স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশ। গত বছরও পিলপিল ৪৮টি ডিম দেয়; কিন্তু তা থেকেও একটি বাচ্চাও ফোটেনি। পিলপিলের ডিমে গত তিন বছর কোনো বাচ্চা ফুটানো সম্ভব হয়নি। শনিবার পিলপিলের ডিম থেকে ফুটে বের হওয়া চারটিসহ কুমির প্রজনন কেন্দ্রের মোট কুমিরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯৬টিতে।
কুমির প্রজনন কেন্দ্রে পিলপিল ও জুলিয়েট নামের দুটি নারী কুমির দিয়েই প্রজনন কার্যক্রম চলে আসছে। এর মধ্যে গত ২৯ মে জুলিয়েট ৫২টি ডিম দিলেও তা থেকে কোনো বাচ্চা ফুটে বের হয়নি। করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আজাদ কবির বলেন, ২০২০ সালে পিলপিল ৪৪টি আর জুলিয়েট ৫২টি ডিম দেয়। এর মধ্যে পিলপিলের চারটি বাচ্চা হলেও জুলিয়েটের ডিম থেকে কোনো বাচ্চা আসেনি।
গত ২০১৭, ১৮ ও ১৯ সালে পিলপিল ও জুলিয়েটের ডিম থেকে একটিও বাচ্চা ফোটেনি। তবে এ কারণে যথাসময়ে সঠিক তাপমাত্রা না-পাওয়া ও কেন্দ্রের ইনকিউবেটরের ক্রুটিকেই দায়ী করছেন মো. আজাদ কবির।