‘আন্দোলন চাই, সময় মতো আমি নাই’ এই মানসিকতা না বদলালে আন্দোলনে সফলতা আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আন্দোলন চাই, সময় মতো আমি নিজে নাই, টেলিফোন বন্ধ। রাজপথে রক্ত দিমু, কর্মীরে বলুম সাবধানে থাইকো-হয় না, হয় না। ঈমান ঠিক করেন যেদিন বলতে পারেন মরতে হয় মরব, গণতন্ত্র আনব। সেদিনই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে, সেদিনই খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে, সেদিনই দেশ মুক্তি পাবে, সেদিনই জাতীয়তাবাদী শক্তি গোলামির জিঞ্জির ছিঁড়ে নিজেদের মুক্ত করতে পারবে।’ রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে দলটির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদ ও ১/১১‘র সেনা প্রধান মঈন উ আহমেদের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘১৯৮২ সালে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে স্বৈরাচার ক্ষমতায় আসছে, গণতন্ত্র বিসর্জন বুটের তলায় চলে গেল। আর শেখ হাসিনা বললেন, “আই অ্যাম নট আনহ্যাপী”। গণতন্ত্র চলে গেলে যিনি বলেন, আনহ্যাপী, গণতন্ত্রবিহীন রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী তার জন্য সুখের। নাউ সি ইজ হ্যাপী। কেবল উইথ আউট সাপোর্ট, উইথ আউট ভোট সে বারবার প্রধানমন্ত্রী আছে। ১/১১ তে কী হলো? জেনারেল মঈন উ আহমেদ আসল। কী কারণে আসল? তাদের (আওয়ামী লীগ) যদি ক্ষমতা থাকত, তারা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারত। তাহলে তারা কী কারণে আন্দোলন করল, লগি-বৈঠা.. অনেক ঘটনা করে মঈন উ আহমদকে আনল। তিনি (শেখ হাসিনা) বিদেশ যাওয়ার সময়ে এয়ারপোর্টে বললেন, তাদের সকল অপকর্ম আমি বৈধতা দেব। সেইদিনই চুক্তি ফাইনাল।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেকারণেই বলছি, মঈন উ আহমেদ এবং হোসেইন মো এরশাদ একই বৃন্তের দুটি ফুল। এদের রাজনৈতিক জন্ম-ভাবনা একই দেশে, যেই দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঠিকানা। ঠিকানা দুই রকম থাকে না। একটা হলো মাতৃভূমি আরেকটা সেকেন্ড হোম করে না। আজকের প্রধানমন্ত্রীর নিজের হোমের থেকে সেকেন্ড হোমের প্রতি বেশি দুর্বল। নিজের হোমের থেকে সেকেন্ড হোমের প্রতি বেশি দুবর্ল, এই দুর্বলতাই আমাদের জাতীয় জীবনে বড় বিপর্যয়। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠির দল জাতীয়তাবাদী দল, এই দল শুধু আপনার আমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আপনারা মাঠে না থাকলে জনগন আপনাদের পাশে থাকবে।’
ঢাকা জেলা সভাপতি দেওয়ান মো. সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, তমিজউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।