গত বছর নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলা চালানো ব্রেন্টন টারান্টের আরো একটি মসজিদে হামলার পরিকল্পনা ছিল। সোমবার এক শুনানিতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। শুনানিতে বলা হয়, টারান্ট মসজিদগুলো পুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। যথাসম্ভব হত্যা করতে চেয়েছিলেন ওই অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ জন মানুষকে হত্যা করেন টারান্ট। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, টারান্ট তার বিরুদ্ধে আনা ৫১টি হত্যা ও ৪০টি হত্যাচেষ্টা ও একটি সন্ত্রাসবাদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন। ২৯ বছর বয়সী টারান্টকে প্যারোলবিহীন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে। নিউজিল্যান্ডে এর আগে এমন শাস্তি আর কাউকে দেওয়া হয়নি। সোমবার ক্রাইস্টচার্চ হামলায় বেঁচে যাওয়া ও ভুক্তোভোগীদের পরিবারের সম্মুখীন হন তিনি।
তাদের একজন মায়ুন সালামা বলেন, আপনি নিজেকে ৫১ জন নির্দোষ মানুষকে হত্যার অধিকার দিয়েছেন। আপনার চোখে তাদের একমাত্র অপরাধ ছিল মুসলিম হওয়া। আপনার পাপ বোধশক্তির বাইরে, আমি আপনাকে ক্ষমা করতে পারবো না।
প্রসঙ্গত, টারান্ট গত বছরের ১৫ই মার্চ, শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় প্রথমে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক নিয়ে হামলা চালায়। সেখান থেকে গাড়ি চালিয়ে ৫ কিলোমিটার দূরের লিনউড মসজিদে হামলা চালায়। তার হামলার নৃশংসতায় কেঁপে উঠে বিশ্ব। এর প্রেক্ষিতে নিউজিল্যান্ডে অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনা হয়।
বিবিসি জানায়, ক্রাইস্টচার্চ হামলা নিয়ে সোমবার থেকে শুরু হওয়া শুনানি চার দিন ধরে চলবে। শুনানির প্রথম দিনে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বার্নাবি হাওয়েস আদালতকে বলেন, টারান্ট বহুদিন ধরেই নিউজিল্যান্ডের মসজিদগুলোয় হামলার পরিকল্পনা করছিল। তার লক্ষ্য ছিল, যথাসম্ভব মানুষকে হতাহত করা।
তিনি নিউজিল্যান্ডের মসজিদগুলোর অবস্থান, ফ্লোরের নকশাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল, মসজিদগুলো যখন সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকবে তখন হামলা চালানো। হামলার কয়েক মাস আগে তিনি ক্রাইস্টচার্চে ভ্রমণ করেন। সেখানে আল নূর মসজিদের ওপর ড্রোন চালান। আল নূর ও লিনউড মসজিদের পর এশবার্টন মসজিদেও হামলার পরিকল্পনা ছিল টারান্টের। তবে তার আগেই তাকে আটক করা হয়।