মহামারি করোনার কারণে ঈদুল ফিতরে নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় না গিয়ে বিএনপির বেশির ভাগ নেতা রাজধানীতেই ঈদ উদ্যাপন করেছিলেন। এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশজুড়ে বন্যা। এ কারণে ঈদুল আজহায়ও দলটির বেশির ভাগ সিনিয়র নেতা ঢাকায়ই ঈদ করবেন।
ঈদের নামাজের পর কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের কোলাকুলি, হাত মেলানোর চিরচেনা সেই চিত্র এবারও দেখা যাবে না। তবে নেতারা ঢাকার বাইরে যেতে না পারলেও নিজ নিজ এলাকায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি দেবেন।
অন্যদিকে এরই মধ্যে তাঁরা অসচ্ছল নেতাকর্মীদের কাছে ঈদের উপহারসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি চেয়ারপারসন স্থানীয় নেতাকর্মীদের বন্যাকবলিত মানুষের পাশে থাকতে বলেছেন।
গত ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পেয়ে খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানের বাসভবনে অবস্থান করছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহার দিনও কোনো অনুষ্ঠান থাকছে না। শুধু পরিবারের সদস্য এবং দলের সিনিয়র কয়েকজন নেতাকে ঈদের দিন সাক্ষাৎ দিতে পারেন তিনি।
দলটির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেয়ারপারসনের মতো দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকায়ই ঈদ করবেন। তবে ঈদের দিন সকাল ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে যাবেন দলটির স্থায়ী কমিটির নেতারা। পরে তাঁরা বনানী কবরস্থানে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করবেন। প্রতিবছর নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এই কর্মসূচি পালন করা হলেও এবার তা হবে না।
জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিবার নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ করলেও এবার ঢাকায় থাকছেন। তাঁর মতো স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঢাকায়ই ঈদ করবেন। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান পরিস্থিতি বুঝে ঈদের দিন নিজ নিজ এলাকা কেরানীগঞ্জ ও নরসিংদীতে যেতে পারেন।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিজ জেলা চট্টগ্রামেই ঈদ করবেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মোহাম্মদ শাহজাহান, শওকত মাহমুদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ঢাকায় ঈদ করবেন। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসায় ঈদ করবেন।
করোনাভাইরাসের কারণে বিএনপির নেতাদের মতো ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও ঢাকায় ঈদ করবেন। জানা গেছে, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশের সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ ঢাকায়ই ঈদ করবেন।