মহসীন কবির: বিহারে কোয়ারেন্টিন সেন্টারগুলোর একটিতে পানির জন্য মারামারি ও সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে সরকার-পরিচালিত সেন্টারটিতে ১৫০ জনকে আইসোলেশন করে রাখা হয়েছে। খবর এনডিটিভির
তবে সেখানে মানুষের স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা পর্যান্ত নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রায় ছয় মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাজ্যটির রাজধানী পাটনা থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ফুলহারা শহরের সমস্তিপুরে কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজন একটি স্কুলের মাঠে জড়ো হন। স্কুলটিকে অস্থায়ী কোয়ারেন্টিন সেন্টার বানানো হয়েছে।
একটি পানির ট্যাংকার আসার পরেই শুরু হয় মারামারি। বালতি হাতে লোকজন পরস্পরের সঙ্গে পানির জন্য কাড়াকাড়ি ও কিলাকিলি আরম্ভ করেন। চিৎকার-চেঁচামেচিও চলছিল সমানতালে। বিহারে এখন পর্যন্ত হাজারখানেক লোক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পঞ্চায়েত ও ব্লক এলাকায় আইসোলেশন সেন্টারও চালু করা হয়েছে। যাতে সাড়ে তিন লাখ লোককে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়।
এসব কেন্দ্রগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নিম্নমানের খাদ্য নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ভারতে সরকার পরিচালিত কোয়ারেন্টিন সেন্টারে করোনা আক্রান্তদের জন্য পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থাও নেই। মর্মস্পর্শী ছবি ভাইরাল : ভারতে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, ইয়াকুব নামে এক শ্রমিক পথের ধারে আরেক শ্রমিক ও তার বন্ধু অমৃতকে কোলে নিয়ে বসে আছেন। সবার কাছে সাহায্য চাইছেন তিনি। কিন্তু কেউ শুনছেন না।
স্থানীয় এক বাসিন্দা এমন মর্মস্পর্শী দৃশ্যের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়েন। প্রচণ্ড দাবদাহে শেষ পর্যন্ত এক হাসপাতালে অমৃতের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সুরাতে এক পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। বাড়ি উত্তর প্রদেশের বস্তিতে।কাজ হারিয়ে গুজরাট থেকে উত্তর প্রদেশে ফিরতে ট্রাকে উঠেছিলেন শ্রমিকদের একটি দলের সঙ্গে। ইন্দোরগামী ওই ট্রাকের পেছনে দাঁড়ানোর জায়গার জন্য ৪ হাজার টাকা নেয়া হয় তার কাছ থেকে। কিন্তু পথে যেতে যেতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
এরপর শিবপুরীতে তাকে ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। অন্যরা কেউই তার সঙ্গে থাকেননি। শুধু বন্ধু ইয়াকুব তার সঙ্গে ট্রাক থেকে নেমে যান। শিবপুরীর এক চিকিৎসক জানান, অমৃতের প্রচণ্ড জ্বর ছিল। সেই সঙ্গে বমি। দাবদাহে আক্রান্ত হলে এই ধরনের সমস্যা হয়। তবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল এলে বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার হবে। ইয়াকুবকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে লকডাউনের কারণে চাকরি হারিয়েছেন অন্য রাজ্যে কাজ করা লাখ লাখ শ্রমিক। রাতারাতি রোজগার, বাসস্থান হারিয়ে ফেলার পর দীর্ঘ পথ পেরিয়ে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে চেষ্টা করেন তারা। বাড়ি ফেরার পথে অনেকেই বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।