সিঙ্গাপুরে প্রবাসীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে একুশে বইমেলা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। গত রোববার দেশটির ওয়েস্টলাইট ডরমিটরিতে স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে এ মেলা চলে রাত নয়টা পর্যন্ত।
বইমেলায় বাংলাদেশি জনপ্রিয় লেখকদের বইয়ের পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত অভিবাসী কর্মীদের বইও ছিল। আগত দর্শকরা সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি লেখকদের বই পেয়ে আনন্দে আপ্লুত হন।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে রিপন চৌধুরীর স্বাগত বক্তবের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এছাড়াও প্রবাসীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্বাগত বক্তব্য দেন সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ নাজমুল খাঁন। প্রবাসীদের ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত করার জন্য বক্তব্য দেন অগ্রণী ব্যাংক সিঙ্গাপুর শাখার সিইও শরীফ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য প্রদান করেন অনুষ্ঠানের সহযোগী সংগঠন সামা সামার পক্ষে কারি তামুরা, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষক আমান্ডা, অতিথি হুয়ান টিং অং।
এছাড়াও আমেরুল ইসলাম সোহেল প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, প্রবাসে আমরা একেকজন একেকটা বাংলাদেশ। আমরা প্রতিনিধিত্ব করি বাংলাদেশের। এখানে অনেকেই আছে যারা কখনো বাংলাদেশে যাইনি এমনকি যাওয়ার সম্ভাবনাও নেই- তবুও তারা আমাদের কথাবার্তা, চালচলন, পোশাক দেখে আমাদের দেশ সম্পর্কে একটি প্রতিচ্ছবি তৈরি করেন।আমাদের মাঝেই তারা পুরো বাংলাদেশকে দেখেন। সুতরাং এখানে কিছু করার আগে চিন্তা করতে হবে পুরো দেশ নিয়ে।
আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত বক্তব্য শেষে অস্থায়ী শহীদ মিনারে আগত অতিথি ও দর্শকরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলা কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে। কবিতা আবৃত্তি করেন কবি ও লেখক শরীফ উদ্দিন, কবি সাইফ তমাল, কবি শাহ মিনহাজ, আমেরুল ইসলাম সোহেল ও ইন্দোনেশিয়ান কবি ইউলিয়া।
আমন্ত্রিত দর্শকদের একজন বলেন, সিঙ্গাপুরে একুশে বইমেলা, একুশের কবিতা ও বাংলা গানের আয়োজন দেখে খুবই ভালো লাগছে।
বইমেলার আয়োজকদের একজন বলেন, সিঙ্গাপুরে অন্যান্য ভাষাভাষীদের মাঝে বাংলা ভাষার ইতিহাস ও অমর একুশের তাৎপর্য তুলে ধরার জন্য এই আয়োজন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অন্যান্য ভাষাভাষীরাও বাংলা ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে। অন্যান্য ভাষাভাষীরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করায় তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
ভাষা আন্দোলনের উপর আলোচনার সময় আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুরে স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরির দাবি জানানো হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী নিজাম নৃত্য পরিবেশেন করেন।
দেশাত্মবোধক ও জনপ্রিয় বাংলা গান পরিবেশন করেন ‘ফ্রিডম ব্যান্ড সিঙ্গাপুর’ ও মিস্টার পপুলার খ্যাত সঙ্গীত শিল্পী আনোয়ার হোসেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন আওলাদ ও দৌলত। জনপ্রিয় বাংলা গান গেয়ে তারা দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন শিল্পীরা। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল আনোয়ার হোসেনের তামিল গান। তিনি তামিল গানের মাধ্যমে সমস্ত তামিলদের মাতিয়ে রাখেন।
অনুষ্ঠান শেষে রিপন চৌধুরী আমন্ত্রিত শিল্পী ও সহযোগী সংগঠনের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।